ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘অর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি কোষাগারে জমা বিল পাস’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২০
‘অর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারি কোষাগারে জমা বিল পাস’

ঢাকা: দেশের আর্থিকখাতে সুশৃঙ্খলা ফেরাতে জাতীয় সংসদে ‘স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বয়ত্তশাসিতসহ সকল সংস্থাসমূহের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান বিল ২০২০’ পাস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল৷ 

তিনি বলেছেন, আমরা কোনো অসৎ বা অসাধু উদ্দেশ্যে এই বিলটি পাস করিনি। যে আইনটি করা হয়েছে তা যথাযথভাবে করা হয়েছে এবং এটি অবশ্যই আমাদের অর্থনীতিতে একটি অর্থবহ ভূমিকা পালন করবে।

বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।  

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা গতকাল (বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি) সংসদে একটি বিল পাস করেছি। বিলটি নিয়ে বিরোধীদল আপত্তি প্রকাশ করেছে। তারা কতগুলো দাবি উত্থাপন করেছেন। পরে এসব দাবির পক্ষে তারা তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। তারা বিল প্রত্যাহারের জন্য কারণ হিসেবে বলছেন জোর করে টাকা নিয়ে আসার জন্য এ আইন করেছি।  

‘তারা যদি বোঝেন তাহলে কেন তারা বলছেন, যেসব প্রতিষ্ঠান বাকি রয়েছে তাও অন্তর্ভুক্ত করতে। অনেকেই রয়েছেন যারা আমাদের ভালো কাজগুলো পছন্দ করে না সামান্য কিছু পেলেই হইচই করে। সংসদে বসে বসে দেখতাম কোনোদিন কথা বলতাম না, এখন কথা বলতে হচ্ছে। আগে দুই একজন রিঅ্যাক্ট করতেন এখন বুঝি তারা যেভাবে রিঅ্যাক্ট করেন, তা কোনো গণতন্ত্রের ভাষা নয়, সভ্য সমাজে উচ্চারণ করা যাবে না। ’

তিনি বলেন, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, স্ব-শাসিত যে সমস্ত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দেশে সৃষ্টি হয়। তখন দেশের সরকারি অর্থ বা নাগরিকদের অর্থে অর্থায়ন হয় এবং আমরা অর্থায়ন করে থাকি।  অর্থায়ন করার পড় যখন তারা প্রফিট আর্ন করা আরম্ভ করে তখন তারা নিজেরা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করে।  

‘সেজন্য দীর্ঘদিন থেকে এগুলোর উপর কাজ হয়ে আসছে। আমরা এ বিলটি নতুন করে করিনি। এর আগেও সংসদে দুইটি বিল পাস করে। একই রকম স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠানের বিল পাস হয়। গতকাল আমরা যে বিলটি নিয়ে আসছি। একইভাবে বিলটি নিয়ে আসা হয়েছিল। একটা বিল হচ্ছে উদ্ভিদের জাত সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা আইন। এই আইনটি বাংলাদেশ গেজেটে ৯ মে ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয়। সেখানে ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের ৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে প্রত্যেক অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানগুলো সকল ব্যয় নির্বাহের পর  কর্তৃপক্ষ তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদ্ন করিতে পারিবে। এটা একটা আইন। ’ 

অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তফা কামাল বলেন, অপর আইনে বলা হয়েছে, রাজশাহী টাউন ডেভেলপমেন্ট অথোরাইজ অর্ডিনেন্স সেটাকে রহিত করে আরেকটা আইন করেছে। সে আইনটিরও নাম দিয়েছে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন। এ আইনেও একইভাবে ওই ধারাটি সন্নিবেশিত হয়েছে। গতকালের বিলটি বিষয়েও আমি একই কথা বলেছি।  

তিনি বলেন, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন ফাইনান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান বিল ২০২০। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের হাতে যে টাকা থাকবে আমরা মনে করি প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। সে বিষয় জানা সবার অধিকার। আর জানতে হলে অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে জানতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজেদের বোর্ড রয়েছে, সেখানে যদি নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় যে তাদের আয় হয়েছে ১০ টাকা সেটা তারা কোথায় ব্যয় করবে।  

‘এক্ষেত্রে সরকারের নিয়ম নীতি মানতে হবে। সেজন্য আমরা চেয়েছি যে প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের সব কাজকর্মের ব্যয় মিটানোর পর তাদের হাতে যে অর্থ থাকবে তার ২৫ শতাংশ সরকারি কোষাগারে দিতে হবে। এটা একটা নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়। যখন তারা বিপদে পড়বে তখন তাদের সহায়তা করা হবে। যেমন- জুটমিল, সুগারমিল প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান নয়। সেজন্য তাদের বিভিন্ন প্রকারের অার্থিক সহায়তা করে থাকি। এ প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে। সুতরাং সরকারকে দায়িত্ব নিয়ে এগুলোকে চালাতে হবে। ’

অর্থমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি বাণিজ্য ৫ শতাংশের মতো নেগিটিভ গ্রোথ রয়েছে, তবে বছর শেষে তা থাকবে না। পৃথিবীতে একটি দেশও নেই যেখানে নেগেটিভ গ্রোথ নেই। থ্যাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও ভারতে নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছে। এটা বাস্তবস্তা, স্বীকার করতে হবে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে কয়েকটি বৈঠক করা হয়েছে এবং সেখান থেকেও বের হয়ে আসবো। সামষ্টিক অর্থনীতি ওভার অল খারাপ নয়।

করোনা ভাইরাস নিয়ে কোনো প্রভাব পড়বে কি-না জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমি চাই না এর প্রভাব আমাদের এখানে আসুক। সারা বিশ্বের অর্থনীতি এমনভাবে যুক্ত যে, এক দেশে হলে অন্য দেশে প্রভাব ফেলে, আমরা এটা চাই না। রপ্তানি এখন সারা বিশ্বে কমেছে। মাঝে মাঝে এ ধরনের অবস্থা তৈরি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২০ 
জিসিজি/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।