ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

টিকফা বৈঠক: বাণিজ্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তার আশ্বাস আমেরিকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২০
টিকফা বৈঠক: বাণিজ্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তার আশ্বাস আমেরিকার

ঢাকা: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত পঞ্চম টিকফা বৈঠকে তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশি পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্কহার হ্রাস, জিএসপি সুবিধা পুনঃপ্রবর্তন, বাংলাদেশে মার্কিন বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও বাণিজ্য সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য ও কাস্টমস সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে 'ক্যাপাসিটি বিল্ডিং'-এ বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত পঞ্চম টিকফা সভায় দু-দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশে বিদ্যমান বিনিয়োগ পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা হয়।

বৈঠকে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্জিত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সরকারের রপ্তানিবান্ধব বাণিজ্য নীতি, বাজারনির্ভর অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও বেসরকারি অংশীজনের অংশগ্রহণকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে শুরু হওয়া বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তির (টিকফা) পঞ্চম সভা শেষ হয় বিকেল ৪টায়।  

সভায় বাংলাদেশের পক্ষে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ'র দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ মি. ক্রিস্টোফার উইলসন ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার।

এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন জানান, বাংলাদেশ টিকফার বর্তমান বৈঠকে জিএসপি সুবিধা বিবেচনার দাবি করলে ইউএসটিআর'র প্রতিনিধিদলের নেতা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ডব্লিউটিও'র বিধিবিধানের বিষয়ে উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রদত্ত জিএসপির অনুরূপ ইবিএ সুবিধা পেয়ে আসছে বিবেচনায় ইউএসএ-কে বিষয়টি পুনঃবিবেচনার আহ্বান জানানো হয়। ইউএসএ প্রতিনিধিদলের নেতা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার আশ্বাস দেন। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে হতে মেধাস্বত্ব (আইপিআর), ডিজিটাল ট্রেড (ক্রস বর্ডার ডেটা ফ্লো), টেকনোলজি ট্রান্সফার বিষয়ে বাংলাদেশে বিদ্যমান বিধিবিধান ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধি টিকফার উদ্দেশ্য হলেও এ ক্ষেত্রে আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। তবে পঞ্চম টিকফা সভার অগ্রগতির বিষয়ে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ সভাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করা হয়।

সভায় বাংলাদেশের লেবার পরিস্থিতি উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব জানান, শ্রম আইনের আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা ও আইএলও নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করে ২০১৮ সালে সংশোধিত লেবার আইনের প্রবিধানসমূহ সভায় অবহিত করা হয়। শ্রমিক স্বার্থ সংরক্ষণে কোর্ট স্থাপন, লেবার ইন্সপেকশন বিষয়েও অবহিত করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ হতে শ্রমিক স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশের গৃহীত কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।

বৈঠকে স্বাগত বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরামের সভায় আগত মার্কিন প্রতিনিধিদলকে মহান মার্চ ও মুজিববর্ষের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আন্তরিক শুভেচ্ছা। একই সঙ্গে এলডিসি হতে উত্তরণে ও এসডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্মুখে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষ্যে টিকফার মাধ্যমে বাংলাদেশ বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।  

বাণিজ্য সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে টিকফার পঞ্চম সভার মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ভবিষ্যতে অধিকতর সমৃদ্ধ হবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার এবং অন্যতম বিনিয়োগ ও উন্নয়ন সহযোগী। বাংলাদেশে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করি আমরা। সভায় বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক খাতে উন্নয়ন, জাতীয় পরিকল্পনা 'ভিশন ২০২১' ও 'ভিশন ২০৪১' এবং ২০২৪ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের বিষয় উল্লেখ করে সামগ্রিক সহযোগিতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২০
জিসিজি/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।