ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আরও ১০০ রেলকোচ মেরামতে প্রকল্প উঠছে একনেকে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২০
আরও ১০০ রেলকোচ মেরামতে প্রকল্প উঠছে একনেকে ট্রেন

ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে বর্তমানে যে ৯০৭টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ (এমজি কোচ) রয়েছে, তার মধ্যে ৪৯২টির বয়স ৩৫ বছর পেরিয়ে গেছে। এরমধ্যে আবার ৪৫০টির অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকিপূর্ণ কোচগুলোর মধ্যে ১০০টির মেরামত কার চলছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ রয়ে গেছে আরও ৩৫০টি এমজি কোচ। এগুলোকে মেরামতের লক্ষ্যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। প্রকল্পের আওতায় আরও ১০০টি এমজি কোচ মেরামত করা হবে। বাকি কোচগুলোও মেরামত করা হবে পর্যায়ক্রমে।

প্রাথমিকভাবে আরও ১০০টি এমজি কোচ মেরামতের জন্য গৃহীত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায়।

পর্যায়ক্রমে সবগুলো কোচ একইভাবে মেরামত করা হবে।

এ হিসেবে এটিসহ মোট নয়টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সামনের সভায়। এ সপ্তাহের বৈঠক রোববার (২১ জুন) ডাকা হয়েছে। এ দিনে প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।

গণভবন থেকে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপাসন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান উপস্থিত থাকবেন। একনেক সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেবেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

এবারের একনেক সভা প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রধান প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, এবার রোববার (২১ জুন) একনেক সভা ডাকা হয়েছে। সভায় নয়টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। দেশের সার্বিক বিবেচনা মাথায় রেখে প্রকল্পগুলো উপস্থাপন করা হবে।

যাত্রী চাহিদা পূরণে বর্তমানে অনেক কোচ ওভার-সিডিউল চলাচল করছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন সিডিউলে মেরামত না হওয়ায় কোচগুলোর দশা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। যা নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকি কাটাতে কোচ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

যাত্রীসেবার মান বাড়ানো ও যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব বাড়াতে রেলের ১০০টি ক্যারেজ পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ৭৪ কোটি ১১ লাখ টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যাত্রীবাহী গাড়ির মেরামত ব্যাকলগ ও গাড়ির প্রাপ্যতা বাড়বে। বাড়বে যাত্রীসেবার মান এবং রেলওয়েসেবার মানও।

সব ক্যারেজকে কাজের উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় মেরামত কাজে সময় ও অর্থ দুটিই বেশি লাগে। কিন্তু পাহাড়তলী কারখানায় জনবলের স্বল্পতা ও বাড়তি অর্থের সংস্থান না থাকার কারণে বেশি মেরামত প্রয়োজন হওয়া গাড়িগুলোর কাজ পড়ে থাকে। এতে করে ভারী গাড়িগুলোর কাজ জমে ব্যাকলগ তৈরি হয়েছে।

রেলপথে যাত্রীর চাপ মোকাবিলা করতে না পারা প্রায় ৪০০ ভারী মিটারগেজ ক্যারেজ বা কোচ চলাচল করছে। এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেও। যাত্রী চাহিদার কারণে ওভারডিউ এসব কোচ রেলবহর থেকে বাদও দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলমান থাকায় এর আগেও দুইটি প্রকল্পের মাধ্যমে দুইটি ক্যারেজ প্রয়োজনীয় মেরামতের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আরও একশ ক্যারেজ পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া এই একনেক সভায় জামালপুর জেলার কারাগার পুনর্নির্মাণ, জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস উৎপাদন বৃদ্ধি, মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার সদর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষার প্রকল্প একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। একইসঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প ও বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় ধাপে একনেক সভায় উঠছে।

হাওর অঞ্চলে টেকসই পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পও একনেক সভায় উঠছে। একইসঙ্গে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ (হরিদাসপুর)-মোল্লাহাট মহাসড়ক মান উন্নয়ন প্রকল্পও এই বৈঠকে উঠছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২০
এমআইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।