ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মোটর সাইকেলের পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি চায় বিএমএএমএ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
মোটর সাইকেলের পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি চায় বিএমএএমএ

ঢাকা: মোট জনসংখ্যার বিশাল একটি অংশ তরুণ হওয়ায় বাংলাদেশে দিন দিন ভালো মানের মোটর সাইকেলের চাহিদা বাড়ছে। সেই চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে দেশে মোটর সাইকেলের উৎপাদন ও অ্যাসেম্বলি নীতি সহায়তার আশ্বাসে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে উদ্যোক্তারা। কিন্তু আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সেই নীতির প্রতিফলন ঘটেনি। ওই নীতির প্রতিফলন ও আগামী পাঁচ বছরের জন্য মোটর সাইকেলের পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি চায় বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএএমএ)।

এরই মাঝে দেশে মোটর সাইকেলের উৎপাদন ও অ্যাসেম্বলি শিল্পের বিকাশের কথা মাথায় রেখে বাজেটে এ বিষয়ক প্রত্যাশার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে বিএমএএমএ। এর আগে দেশীয় মোটরসাইকেল শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন সময়ে নীতি সহায়তা দিয়েছে।

ফলে গত তিন বছরে মোটর সাইকেলের বিক্রি দেড় লাখ থেকে ৫ লাখে উন্নীত হয়েছে এবং এ খাত থেকে সরকারের কাছে রাজস্ব জমা পড়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু পেইন্টেড পার্ট কম্পোনেন্ট আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে মোটর সাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাট (মুসক) অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ না বাড়ানোয় হুমকির মুখে পড়বে দেশি মোটরসাইকেল শিল্প। পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশন চার্জ কমানো না হলে গ্রাহকের মোটর সাইকেল কেনার আগ্রহে ভাটা পড়তে পারে বলে উদ্বেগ বিএমএএমএ’র।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের আয় সক্ষমতা কমার কারণে আগামীতে মোটর সাইকেলের বিক্রি ৩০-৪০ শতাংশ কমতে পারে। আবার শুল্ক সুবিধা না বাড়ানোর কারণে বিক্রি আরও ২০ শতাংশ কমতে পারে। করোনা কালে বিগত তিন মাসেই এ শিল্পে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ ক্ষতির পরিমাণ দুই হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। ফলে এ খাতে ৮ হাজার কোটি টাকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এখন অনিশ্চয়তার মুখে। এছাড়া এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দেশের প্রায় তিন লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে স্থানীয় পর্যায়ে মোটরসাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাট (মুসক) অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ এবং মোটর সাইকেলের পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি আরও পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মোটরসাইকেলের রেজিসেট্রশন ফি কমিয়ে আনা প্রয়োজন বলেও অভিমত সংশ্লিষ্টদের। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে মোটরসাইকেল বিক্রিতে ১০ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন খরচ ধরা হয়। সব মিলিয়ে তাতে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি প্রায় ২৫ শতাংশ ফলে গ্রাহককে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হয়। এটি কমিয়ে ১০ শতাংশে আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা।  

তারা আরও জানান, করোনার কারণে গত পাঁচ মাস ধরে এই খাতের ইঞ্জিনিয়াররা দেশে আসতে পারেননি। আগামীতেও তারা আসতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। ফলে উৎপাদনের গতি ধরে রাখতে হলে পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি প্রয়োজন। এছাড়া নীমিতালায় ২০২৫ সালে ১৫ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব সুবিধা না দিলে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এ বিষয়ে বিএমএএমএ’র সভাপতি ও উত্তরা মোটর্স’র চেয়ারম্যান মতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের নীতি সহায়তা ছাড়া এ খাত টিকিয়ে রাখাই এখন অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়বে। গত কয়েক বছরে আমরা মোটর সাইকেল শিল্পে বিপুল বিনিয়োগ করেছি। যে সময় বিক্রি অনেক বাড়ার কথা, তখন তা করোনার ধাক্কায় বিপর্যস্ত। চলতি বাজেটে ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহার এই সংকট আরও ত্বরান্বিত করবে। দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও রাজস্ব বাড়াতেই ভ্যাট সুবিধা ও পেইন্টেড সিকেডি আমদানির অনুমতি ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২০
এমআইএস/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।