ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেনাপোলে সাড়ে ৩ মাস পর রপ্তানি বাণিজ্য সচল

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২০
বেনাপোলে সাড়ে ৩ মাস পর রপ্তানি বাণিজ্য সচল

বেনাপোল (যশোর): করোনার প্রভাবে দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পর পুনরায় রপ্তানি বাণিজ্য সচল হয়েছে। তবে আমদানি বাণিজ্য সচল ছিল।

রোববার (৫ জুলাই) বিকেল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দু’দেশের মধ্যে এ বাণিজ্য শুরু করা হয়। এছাড়া প্রথম দিনে পাঁচটি আমদানির ও পাঁচটি রপ্তানির পণ্যবোঝাই ট্রাক দুই বন্দরে প্রবেশ করেছে।

এর আগে করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২২ মার্চ এ পথে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তবে গত ৭ মে আমদানি সচল হলেও রপ্তানি বন্ধ ছিল। রোববার থেকে রপ্তানি বাণিজ্যও সচল হয়েছে।  

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় চালকরা যাতে পোর্টের বাইরে যেতে না পারেন সে ব্যাপারে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। এবং বাংলাদেশি ট্রাক চালকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রপ্তানির পণ্য নিয়ে ভারতে পাঠানো হচ্ছে।  

ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় তাদের অনেক লোকশান গুণতে হয়েছে। তবে বাণিজ্য চালু হওয়ায় কিছুটা হলেও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন তারা।  

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ (কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বাংলানিউজকে বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস ধরে বন্দরটি দিয়ে রপ্তানি বন্ধ ছিল। করোনার ক্রান্তি সময়ে স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্যান্য নির্দেশনা মেনে রোববার বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রপ্তানি শুরু হয়েছে। আমদানি-রপ্তানি সচল হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।  

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা নাঈম মীরন বাংলানিউজকে বলেন, করোনার সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা থাকায় সীমান্ত অতিক্রমের আগেই দু’দেশের গাড়ি চালকদের শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া ট্রাকগুলো উভয় দেশে স্যানিটাইজ করা হবে। ফেরার সময়ও চালকদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। সেই সঙ্গে দ্রুত পণ্য খালাস করে দিনে দিনে ট্রাকগুলো ফিরে যাবে।

তিনি আরও বলেন, যে সমস্ত পণ্য ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তার কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ করছেন। পরে শুল্ক পরিশোধ করে খালাস দেওয়া হবে।

বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব ৮৩ কিলোমিটার। মাত্র তিন ঘণ্টায় একটি পণ্যবাহী ট্রাক আমদানি পণ্য নিয়ে পৌঁছাতে পারে কলকাতা শহরে। তেমনি একই সময় কলকাতা থেকে পণ্যবাহী ট্রাক পৌঁছায় বেনাপোল বন্দরে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে এ পথে ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে প্রবল আগ্রহ রয়েছে। প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হচ্ছে। যা থেকে সরকার প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে থাকে এবং আমদানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন দিন বাড়ছে রপ্তানির পরিমাণ। এছাড়া বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে।  এবছর ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। রপ্তানি পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, কেমিক্যাল, বসুন্ধরা টিস্যু, চালের কুড়া, মেহগনি ফল, মাছ ও অক্সিজেনসহ প্রায় ৫০ ধরনের পণ্য রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।