ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

থমকে গেছে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২০
থমকে গেছে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম ফাইল ফটো

ঢাকা: সংকটে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম, প্রায় বন্ধ রয়েছে কিস্তি আদায়। ফলে নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে।

যার কারণে প্রান্তিক অর্থনীতিতে প্রকট হয়েছে তারল্য সংকট। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। সেখানে ক্ষুদ্র ঋণের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই অর্থ পেতেও রয়েছে নানা জটিলতা।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে পরিমান বিনিয়োগ হয়, তার ৭৩ শতাংশ অর্থের যোগান দেয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিও খাত। অর্থাৎ গ্রামীণ অর্থনীতির ৩ কোটি ৩০ লাখ পরিবারের অর্থায়ন নিশ্চিত করেছে ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণে থমকে গেছে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড। প্রায় বন্ধ হতে চলেছে ঋণ বিতরণ ও কিস্তির টাকা আদায়। বছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে এনজিও খাত। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে তিন মাসে ঋণ বিতরণ কমেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা।

কোস্ট ট্রাস্ট পরিচালক তারেক সাইদ হারুন বলেন, ঋণ বিতরণ কমার ফলে তা সরাসরি গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। গরীব মানুষ এই টাকাটা পায়নি। কিস্তির টাকা এনে কিন্তু আমরা অফিসে জমা রাখি না। আবার নতুন ঋণ বিতরণ করি। যেটা সরাসরি গ্রামের মানুষ কাজে লাগাতে পারে। প্রকল্পটি জাগিয়ে তুলতে পারে।

কৃষি এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে অর্থায়ন নিশ্চিত করে এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো। হিসাব বলছে, গেলো মার্চ থেকে মে এই তিন মাসে এনজিও খাতে ঋণ স্থিতি কমেছে ২২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। সঞ্চয় ঘাটতি হয়েছে ১ হাজার ৯৯ কোটি টাকা।

তারেক সাইদ হারুন বলেন, জুন মাস থেকে আমরা মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অর্থরিটির আদেশে কিস্তি আদায় করতে গেলাম। তখন স্থানীয় প্রশাসনের বাধার শিকার হলাম।

এমন পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে ঋণ আদায়ের হার মাত্র ৫০ থেকে ৫৬ শতাংশ। যা আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক বা ৫০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম। সংকটময় এই সময়ে মাঠ পর্যায়ে তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে, যা সামাল দিতে অর্থায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।  

উন্নয়ন সংস্থা ইনাফির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবা হক বলেন, ঋণ বিতরণে তারল্য সংকট একটি বড় বাধা। দ্রুত ঋণ দিতে তারল্য থাকতে হবে। এতদিন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ঋণের কিস্তি তো আদায় হয়নি। বড়, মাঝারী ও ছোট এনজিওগুলোর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ছোট এনজিওগুলো। এনজিও খাতের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে সেই অর্থ ছাড়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।

মাহবুবা হক বলেন, প্রণোদনার অর্থ ছাড়ের প্রক্রিয়াটা এত ধীরগতির যে মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদার তুলনায়ও খুব বেশি নয়। তারপরও সবাই ইতিবাচকভাবে নিয়েছে এই কারণে যে একটা তহবিলের প্রবাহ অন্তত থাকবে।
 
নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অর্থরিটিরি (এমআএ) অধীনে সারাদেশে ২১ হাজার ৬৬৭টি শাখার মাধ্যমে কাজ করছে সাতশর বেশি মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউট (এমএফআই)। জিডিপিতে মাইক্রো ক্রেডিটের অবদান ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। এমএফআই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে ২লাখ ৫০ হাজার মানুষের।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২০
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।