ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যবসায়ী সংগঠনের বাইরের কারখানার ৫৮ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
ব্যবসায়ী সংগঠনের বাইরের কারখানার ৫৮ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই

ঢাকা: করোনাকালে গার্মেন্টস ব্যাবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য নয় এমন কারাখানার ৫৮ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। জুন মাসে একটি জরিপ সম্পন্ন করে বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এন্টাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট (সিইডি)-এর ম্যাপড ইন বাংলাদেশ (এমআইবি)।

 

জরিপের ফলাফল বুধবার (১২ আগস্ট) ‘বাংলাদেশে সদস্যপদবিহীন তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর উপর করোনা ভাইরাসের প্রভাব’ শিরোনামে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করে তুলে ধরা হয়েছে।
 
এমআইবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সদস্যপদবিহীন কারখানা বলতে ওই সব কারখানা নির্দেশিত হয়েছে, যেগুলো তৈরি পোশাকখাতের প্রধান মালিক সমিতি- বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সদস্য নয়।
 
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিইডি ও ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ যৌথভাবে জরিপটি সম্পন্ন করেছে গত মধ্য জুনে।
 
জরিপের অংশ হিসেবে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলার ৫৫৫টি রপ্তানিমুখী সদস্যপদবিহীন পোশাক কারখানাকে টেলিফোন করে জরিপ করা হয়, যেখানে ৪৪৮টি সদস্যপদবিহীন পোশাক কারখানা অংশ নেয়। এই কারখানাগুলোকে ম্যাপড ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের তথ্যভাণ্ডার থেকে বাছাই করা হয়েছে।  

চার বছর (২০১৭-২০২১) মেয়াদী এ প্রকল্পটি দেশব্যাপী কারখানা শুমারি পরিচালনা করে চলেছে এবং তৈরি পোশাক খাতের স্বচ্ছতার উদ্দেশ্যে একটি ডিজিটাল মানচিত্রে (https://mappedinbangladesh.org/) কারখানার তথ্য প্রকাশ করা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে এমআইবি মানচিত্রে ঢাকা, গাজীপুর, ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ২৮৩৭টি কারখানার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এমআইবির কাছে চট্টগ্রাম জেলার ৫০৫টি কারখানার তথ্য সংগ্রহ করা রয়েছে, যা আরো যাচাই-বাছাইয়ের পরে ডিজিটাল মানচিত্রে প্রকাশিত হবে।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. অতনু রাব্বানী ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথকে প্রতিনিধিত্ব করে ওয়েবিনারে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন। ফলাফল অনুযায়ী, জরিপ চলাকালীন তথা- ২০২০ সালের মধ্য-জুনে জরিপ করা ৪৪৮টি কারখানার মধ্যে ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ কারখানা তথা ৩৭০টি কারখানা চালু রয়েছে এবং এই সদস্যপদবিহীন কারখানাগুলো গড়ে তাদের উৎপাদন ক্ষমতার ৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যবহার করছে। এপ্রিল মাসে এই কারখানাগুলো গড়ে ২ দশমিক ৩ দিন করে চালু ছিল। কিন্তু মে মাসে গড়ে চালু ছিল ৯ দশমিক ৬ দিন।
 
জরিপকালীন কারখানাগুলোতে ৮৬ হাজার ৬৯৭ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। করোনা ভাইরাসের মহামারি শুরুর পরে এই কারখানাগুলো থেকে ৫৮ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে, যা কিনা কারখানাপ্রতি গড়ে ২২৬ জন শ্রমিক।
 
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের বক্তব্য অনুযায়ী, সদস্যপদবিহীন কারখানাগুলোর শ্রমিকদের দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে মালিক সমতিগুলো যে দূরত্ব মেনে চলছে সেই কাচের দেয়াল ভেঙে ফেলা প্রয়োজন।

বিজিএমইএ পরিচালক শরীফ জহির বলেন, সদস্যপদবিহীন কারখানাগুলোর মালিকেরা মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা যারা অবকাঠামাগত সুবিধা পেলে সত্যিকারের উদ্যোক্তায় অবতীর্ণ হবেন এবং দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে পারবেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২০
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।