ঢাকা: বাংলাদেশে অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্পে স্পেনের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার অফিসকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি অ্যাসিস বেনিটেজ সালাসের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্পেন বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহৎ রপ্তানি বাজার। স্পেনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ রয়েছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা সফর বিনিময়ের মাধ্যমে এ বাণিজ্য বাড়াতে পারেন। সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব আনুষ্ঠানিকতা সহজ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকনোমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চীন, কোরিয়া, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে। চীন, ভারতসহ এ অঞ্চল পণ্যের একটি বড় বাজার। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত দক্ষ যুব জনশক্তি রয়েছে। সব দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের চমৎকার স্থান।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য। এ শিল্পে প্রায় পঁয়তাল্লিশ লাখ শ্রমিক কাজ করছে, এর সিংহভাগই নারী। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করে শ্রমিকদের অধিকার ও কাজের ভালো পরিবেশ নিশ্চিত করেছে। শ্রমিকরা এখন কর্মবান্ধব পরিবেশে নিরাপদে কাজ করছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ আরও বেশ কিছু পণ্য রপ্তানির বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, একান্তই মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। স্পেন এ ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহায়তা দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে স্পেনের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করে বাংলাদেশ।
স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূত বলেন, স্পেন বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র। বাণিজ্যিক দিক থেকেও স্পেন বাংলাদেশকে বেশ গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে স্পেন খুশি। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে স্পেনে। আগামীতে আরও বেশি তৈরি পোশাক বাংলাদেশ থেকে আমদানি করবে স্পেন, বাণিজ্যের পরিধিও বাড়বে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে এতে স্পেন খুশি। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও স্পেন বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, স্পেনের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করছে। স্টিল ব্রিজ, রেলওয়েসহ বেশ কিছু সেক্টরে স্পেনের প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে বাংলাদেশে কাজ করছে এবং টেকনিক্যাল সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা সফর বিনিময় করলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে। বাংলাদেশের অ্যাগ্রো প্রসেসিং সেক্টরে বিনিয়োগের বিষয়ে পরীক্ষা করে দেখবে স্পেন।
গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ স্পেনে রপ্তানি করেছে ২৫৫৪.৮২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করেছে ১৮০.১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। উভয় দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২৭৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোভিড-১৯ এর কারণে গত অর্থবছরে বাণিজ্যের পরিমাণ কম ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
জিসিজি/এএ