ঢাকা: চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মাসে ব্যাংকগুলোর কৃষি ঋণ বিতরণের অংক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.৫৯ শতাংশ বা ৬৩০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বেশি।
করোনা মহামারির কারণে সৃষ্টি হওয়া অর্থনৈতিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্প্রসারণমূলক আর্থিক নীতিমালা জারি করায় এটি সম্ভব হয়েছে।
তবে চলতি অর্থবছরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত কৃষি ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এই বিতরণের অংক অনেক কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই-নভেম্বর মাসে ৮৯৩৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বিতরণ করেছে, আগের বছরের একই সময়ে কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছিল ৮৩০৫ কোটি টাকা।
২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২৬,২৯২ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল। সেই বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর গড়ে ২,১৯১ কোটি টাকা বিতরণ করার কথা। কিন্তু ব্যাংকগুলো কৃষকদের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮.৪৩ শতাংশ কম বিতরণ করেছে।
ঋণ বিতরণের পরিমান প্রথম দুই মাস খুবই ভালো ছিল, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি।
ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রথমবারের মতো ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো ২৪১২৪ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ বিতরণ করতে ব্যাংকগুলোতে কঠোর নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
কৃষিখাত যেহেতু দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই করোনা মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে কৃষি প্রধান অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে কৃষি ঋণ বিতরণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে দেশের কর্মশক্তির ৪০ শতাংশের বেশি সরাসরি কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত।
জুনে সারাদেশে বন্যার ফলে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিশাল জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিতে জড়িত বলে ব্যাংকগুলোকে খামার ঋণ বিতরণে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, বন্যাকবলিত খামারিদের জন্য ঝামেলামুক্ত এবং সময়োপযোগী ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে চলতি বছরের ২৩ জুলাই একটি সার্কুলার জারি করে কৃষকদের ঋণ সুবিধা দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছিল। যাতে তারা হাঁস-মুরগি পালন ও গবাদি পশু পালন ও খাদ উত্পাদনের মত কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
গত অর্থ বছরের ব্যাংক ঋণের চেয়ে ২০২০-২১ অর্থ বছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকো কমিয়ে ২ শতাংশ কমানো হয়েছে।
ব্যাংকগুলোকে কৃষকদের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমানোরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কারণ এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিতে কৃষককে ২০ শতাংশেরও বেশি সুদ দিতে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২০
এসই/এজে