ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রাহকের আস্থায় ‘উপায়’ 

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২১
গ্রাহকের আস্থায় ‘উপায়’ 

ঢাকা: প্রযুক্তির ছোঁয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)। এখন দেশের ১০ কোটি ৬০ লাখ মানুষ এমএফএস সেবা গ্রহণ করছেন।

সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জের সুবিধা নিয়ে বাজারে এসেছে আর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) এমএফএস সেবা উপায়। ইতোমধ্যে সারাদেশে ৩৫ হাজারের বেশি এজেন্ট নিয়োগ দিয়েছে উপায়। খুব সহজে কম খরচে ক্যাশ আউট করার পাশাপাশি সমপোযোগী নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে সবাই বেছে নিচ্ছে উপায়।  

ভাটারা এলাকার উপায় এজেন্ট শেখ টেলিকমের মালিক জাকির হোসেন বলেন, আগে যানবাহনে দেওয়া ট্রাফিকের মামলা ভাঙাতে অনেক ঝামেলা হতো, এখন আর সেই ঝামেলা নেই। একটি বাটন চেপে সহজেই ফি পরিশোধ করা যাচ্ছে। আগে ২-৩ মিনিটের মত সময় লাগতো। আর উপায় থেকে ক্যাশ আউট চার্জও অনেক কম। অ্যাপ বা বাটন ফোন যেটা দিয়েই ক্যাশ আউট করা হোক এক হাজারে চার্জ মাত্র ১৪ টাকা। আর ইউসিবিএলের এটিএম বুথ থেকে টাকা তুললে প্রতি হাজারে চার্জ মাত্র ৮ টাকা।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ বাজারের উপায় এজেন্ট আবজাল হোসেন বলেন, কম খরচে ক্যাশ আউট করার সুবিধা দেওয়ায় গ্রাহকের ভালো সাড়া পাচ্ছি। আর কোনো গ্রাহক আমার কাছে জানতে চাইলে কম খরচে ক্যাশ আউট চার্জের জন্য উপায় অ্যাকাউন্ট করার পরামর্শ দিচ্ছি।

রাজধানীতে মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ার করেন শাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আগে ট্রাফিক মামলা দিলে এজেন্টের কাছে গিয়ে নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মামলা ভাঙাতে হতো। এখন উপায় সরাসরি গ্রাহককেই মামলার ফি পরিশোধ করার সুযোগ করে দিয়েছে। এটি খুব ভালো হয়েছে। কারণ মামলা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফি পরিশোধ করলে হাতে হাতে ট্রাফিকের কাছ থেকে কাগজ নিয়ে আসা যায়। আগে যেটা সম্ভব ছিলো না।

উপায় কর্তৃপক্ষ জানায়, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও থাকছে ডিভাইস অথেনটিকেশনের ব্যবস্থাও।

এ বিষয়ে উপায়’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইদুল হক খন্দকার বলেন, উপায় প্লাটফের্ম ব্লক চেইন বেইজড টেকনোলজি। সেটা আধুনিক প্রযুক্তির একটি বড় অংশ। এখানে গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা হয়েছে। দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসখাতে আমরাই প্রথম ব্লক চেইন টেকনোলজির ব্যবহার করছি। আমাদের এর পাশাপাশি অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিভাইস অথেনটিকেশন ব্যবস্থা রয়েছে। আপনার মোবাইল যদি হাতে থাকে, পিন যদি কেউ জেনেও বা বেহাত হয়ে যায়, তাহলেও আপনার উপায় অ্যাকাউন্ট থেকে কেউ টাকা তুলে নিতে পারবে না।

উপায়’র আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে এর মাল্টি ওয়ালেট ফাংশন। সাধারণত, প্রচলিত মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় মোবাইল ওয়ালেট একটাই থাকে। সেখানেই বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আসা টাকা যেমন, বেতন, রেমিটেন্স বা সরকারি ভাতা জমা হয়। কেউ বেতনের টাকা ক্যাশ আউট করে, কারও রেমিটেন্স আসে সেটাও ক্যাশ আউট করে। কিন্তু ক্যাশ আউট চার্জটা একই ধরনের থাকে। ক্যাশ আউট চার্জটা কিভাবে কমানো যায়, তার জন্য উপায় সেই জায়গায় একটি যৌক্তিক সমাধান নিয়ে এসেছে। যৌক্তিক সমাধান হিসেবে উপায় একটা মোবাইল অ্যাকাউন্টের ভেতরে চারটা ভিন্ন ভিন্ন ওয়ালেট করেছে। একটা প্রাইমারি ওয়ালট থাকবে যেখানে সব টাকা জমা থাকবে। পাশাপাশি রয়েছে স্যালারি, রেমিট্যান্স এবং ডিজবার্জমেন্ট ওয়ালেট। প্রতিটা ওয়ালেটের ক্যাশ আউট চার্জ আলাদা। কেউ যদি রেমিটেন্স পায় তাহলে রেমিট্যান্স ওয়ালেটে টাকাটা জমা হবে। রেমিটেন্সের টাকা ক্যাশ আউট করতে গেলে তার জন্য চার্জ হবে হাজারে ১০ টাকা। সরকারি সহায়তার অর্থ অ্যাকাউন্টে ঢুকলে তার জন্য হবে আলাদা ক্যাশ আউট চার্জ। সেটা হবে হাজারে ৭ টাকা। সেলারি ওয়ালেট থেকে ক্যাশ আউট করলে সেটা হবে হাজারে ৯ টাকা। ভিন্ন ভিন্ন ওয়ালেট থাকায় একজন গ্রাহক অনেক কম খরচে ক্যাশ আউট করতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে দেশের ১৯টি ব্যাংক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের অনুমোদন পেলেও কার্যক্রম পরিচালনা করছে মধ্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের উপায়, ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ, ডাক বিভাগের নগদ, ডাচ বাংলা ব্যাংকের রকেট।

সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ, মাল্টি ওয়ালেট সুবিধা ও ব্লক চেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে খুব কম সময়েই উপায় গ্রাহকের কাছে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। মাত্র কয়েক মাসে এজেন্টের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজারের উপরে।  

কর্তৃপক্ষ বলছে, অন্য এমএফএসগুলোর তুলনায় এটি অনেক সহজলভ্য হওয়ায় অতি শিগগিরই উপায় গ্রাহকের আস্থায় পরিণত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২১
এসই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।