ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দুধ-বিস্কুট অন্তর্ভুক্ত করে অবশেষে প্রকল্পে খিচুড়ি রান্না বাতিল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২১
দুধ-বিস্কুট অন্তর্ভুক্ত করে অবশেষে প্রকল্পে খিচুড়ি রান্না বাতিল

ঢাকা: নানা সমালোচনার মুখে অবশেষে প্রকল্প থেকে বাতিল হলো খিচুড়ি রান্নার বিষয়।  প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী সব শিক্ষার্থীকে পর্যায়ক্রমে স্কুল মিল কার্যক্রমের আওতায় এনে তাদের শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় অবদান রাখা, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সামনে রেখে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলো না প্রাইমারি স্কুল মিল প্রকল্প।

প্রকল্পের উদ্যোগী মন্ত্রণালয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

গরম খাবার বলতে মূলত ডাল আর স্থানীয় সবজি দিয়ে বাচ্চাদের খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানোর কথা বলা হয়েছে এখানে।

মঙ্গলবার (০১ জুন)  প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হয়।

প্রকল্প থেকে খিচুড়ি রান্নার ফরমেট বাতিল করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একনেক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন খিচুড়ি রান্না করলে বাচ্চাদের পড়ালেখার ক্ষতি হবে। প্রকল্পের ফরমেট পরিবর্তন করে একদিন দুধ, একদিন ডিম ও একদিন বিস্কুটসহ খাবারে বৈচিত্র থাকতে হবে।

সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন,বাচ্চাদের খাবার দেওয়ার জন্য একনেক সভায় না প্রাইমারি স্কুল মিল প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। খাবারের ফরমেট চেঞ্জ করতে বলা হয়েছে। এভাবে প্রকল্পটি একনেক সভায় আর আসবে না।

এর আগে প্রকল্পের আওতায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠে।

পরিকল্পনা কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আপত্তির মুখে প্রস্তাব থেকে ব্যয়ের পরিমাণ এক হাজার ৬৭১ কোটি টাকা কমানো হয়। এখন প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রকল্পের পুরো অর্থ যোগানো হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল।

কল্পের আওতায়  খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশনের প্রশিক্ষণ নিতে ১ হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিদেশ সফরের একটি প্রস্তাব ছিল, যা নিয়ে সমালোচনা হয়। ফলে খাতটি বাদ দেওয়া হয়েছে।

মার্চ ২০২১ থেকে জুন ২০২৬ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা ছিল । খাদ্যদ্রব্য হিসেবে চাল-ডাল, ভোজ্যতেল, বিস্কুট ও শাকসবজি ইত্যাদি কেনা হবে ১১ লাখ ১১ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন। পরিবহন ও ইন্সপেকশনের জন্যও ব্যয় ধরা হয়েছে।  

খাদ্য  ব্যবস্থাপনা ব্যয়, সার্ভিস  প্রোভাইডার পরিকল্পনা কমিশন জানায়, সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পর্যায়ক্রমে উচ্চ পুষ্টিমানসমৃদ্ধ ফর্টিফাইডবিস্কুট ও প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট, পর্যাপ্ত  প্রোটিন এবং ক্যালরিসমৃদ্ধ রান্না করা গরম খাবার পরিবেশনের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দৈহিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থী ভর্তি ও উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত হবে ও ঝরে পড়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে, যা সার্বিকভাবে শিক্ষার হার ও মান বাড়াতে এবং শিক্ষিত ও সুস্থ জাতি পঠনে সুদুরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। এসব বিষয় বিবেচনায় প্রকল্পটি একনেক সভায় প্রস্তাব করা হয়। নানা কারণে প্রকল্পটি একনেক সভা থেকে বাতিল করা হয়।  

প্রকল্প প্রসঙ্গে আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, প্রকল্পের আওতায় খাবারের ফরমেট একনেক সভায় পছন্দ হয়নি।  

প্রতিদিন খিচুড়ি রান্না হলে বাচ্চাদের পড়ালেখার ক্ষতি হতে পারে। সার্বিক বিষয়ে মনে হয়েছে প্রকল্প থেকে খিচুড়ি রান্নার ফরমেট বাতিল করে অন্য ফরমেটে প্রকল্পটি আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২১
এমআইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।