খাগড়াছড়ি: চলতি মৌসুমে বাজারগুলোতে পাহাড়ি রসালো লিচুতে ভরে যাওয়ার কথা থাকলেও এবার তা হয়নি। গাছগুলোতে এবার লিচুর তেমন ফলন হয়নি।
কৃষি বিভাগ বলছে, খরা আর তীব্র তাপপ্রবাহে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও কম ফলন হয়েছে।
প্রতি বছর মে মাসের শুরু থেকে গাছে গাছে পাকা লিচুর সমারোহ হয়ে থাকে। বাজারগুলোতে রসালো লিচুতে ভরে যায়। সারা বছর পরিচর্যা করার পর ঠিক এই সময়টিতে নগদ টাকা দিয়ে ফলন কিনতে আসে পাইকাররা। এতে খুশি হন কৃষকরা। চাহিদা থাকায় খাগড়াছড়িতে দিনে দিনে বেড়েছে লিচুর বাণিজ্যিক চাষাবাদ। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পাহাড়রে লিচু যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
তবে এবার সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় এবং তীব্র তাপপ্রবাহে অকালে গাছে পেকে ঝরে গেছে লিচু। যে গাছগুলোতে ফলন হয়েছে তা আকারে ছোট। আর বাজারগুলোতে অন্যান্য ফল এলেও বিগত বছরের তুলনায় এবার লিচু অপস্থিতি কম।
খাগড়াছড়ি জেলার নয়টি উপজেলাতেই কম বেশি লিচু বাগান রয়েছে। এখানে দেশী লিচু ছাড়াও চায়না- টু এবং চায়না থ্রি লিচুর চাষ হয়। এ জাত দুইটি স্থানীয় বাজার ও দেশের সর্বত্রই বেশ জনপ্রিয়। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এ বছর খাগড়াছড়িতে লিচুচাষিরা লাভের মুখ দেখেনি।
খাগড়াছড়ির কেয়াংঘাট এলাকার চাষি আবুশি মারমা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার অর্ধেকের কম লিচুর ফলন হয়েছে। আর যা ফলন হয়েছে আকারে ছোট। আগে একশ পিস লিচু ২০০ টাকা করে বিক্রি করলেও এবার ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করেছি।
এ বছর খরার কারণে বেশির ভাগ লিচু গাছে মুকুল শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। খরার কারণে লিচু গুলো বড় হওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় অনেক লিচু গাছেই ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে। লিচু ফলনের সময়ে ঝড়ের কারণে ক্ষতি না হলেও খরার কারণে এ বছর গাছেই নষ্ট হয়ে গেছে বেশির ভাগ লিচু। অধিকাংশ এলাকায় লিচু বাগানে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লিচুর ফলন হয়েছে আর বাকিটা নষ্ট হয়ে গেছে।
খাগড়াছড়ি কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর জেলায় দুই হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৮ মেট্রিক টন।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মর্তুজ আলী বলেন, এবার লিচুর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। সময়মত বৃষ্টি না হওয়া এবং তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ফলন একেবারে কম হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২১
এডি/আরআইএস