ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কিউকম গ্রাহকের টাকা ফেরতে ১০ জানুয়ারির পর ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
কিউকম গ্রাহকের টাকা ফেরতে ১০ জানুয়ারির পর ব্যবস্থা

ঢাকা: পেমেন্ট গেটওয়ে ফস্টারের কাছে ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ডটকমের আটকে থাকা ৩৯০ কোটি টাকা গ্রাহকদের ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী ১০ জানুয়ারির পর টাকা ফেরতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে ফস্টারে আটকে থাকা কিউকমের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সভা শেষে সফিকুজ্জামান জানান, কিউকম, ফোস্টারসহ সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা বসেছি। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ৩৯৭ কোটি টাকা ফস্টারের কাছে আটকা আছে, তার মধ্যে যেটা কিউকম ডেলিভারি করেছে, সেটা তারা দুই পক্ষ বসে আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেবে। এরমধ্যে ভোক্তাদের কতো টাকা ডেলিভারি ছাড়া আটকে আছে সেটা জানাতে হবে। ১০ জানুয়ারির মধ্যে সেই তথ্য পাওয়ার পর এটা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেবো।

গ্রাহকরা কিউকমের টাকা কবে থেকে পাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাদের সময় দিয়েছি ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। তারা তো সেই সময় রিপোর্ট দেবো। এরপর টাকাটা কীভাবে ফেরত দেবো, মামমলাসহ যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো সেটেল করব। সেখানে প্রায় ১৬ হাজার গ্রাহক আছে। এগুলো তো টালি করে দেখতে হবে, সময়তো কিছুটা লাগবেই।

কিউকমের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, গ্রাহকের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো জটিলতা হবে কিনা জানতে চাইলে সফিকুজ্জামান বলেন, কিউকমের মামলার সাথে এটা জড়িত না। এই টাকাটা ফস্টারে আটকা আছে। সুতরাং এটা কিউকমের টাকা না। কিউকম যেটা ডেলিভারি দিয়েছে সেটা তো সেটেল হয়েই গেছে। কিন্তু যেটা ডেলিভারি দেয়নি সেটা দুই পক্ষ বসে যৌথ তালিকা দেবে। যেখানে ফস্টারের টাকা জমা আছে কিন্তু ডেলিভারি হয়নি সেই টাকাটা আমরা গ্রাহককে ফেরত দেবো।  

এসক্রো সার্ভিসে আটকা ২১৪ কোটি টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব বলেন, পুলিশের কাছে আমরা রিপোর্ট চেয়েছি, সেটা এখনো পাইনি। আমরা সাতদিন সময় দিয়েছি। সেই রিপোর্ট পেলে সেটা গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া হবে।

জানা গোছে, বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুনে ‘এসক্রো সিস্টেম’ চালু করেছে। এই পদ্ধতিতে ক্রেতার টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত পেমেন্ট গেটওয়ের কাছে জমা থাকে। কিউকমের পেমেন্ট গেটওয়ে ছিল ফস্টার পেমেন্টস। এই পদ্ধতিতে কিউকম ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে দিয়ে চালানসহ ডকুমেন্ট ফস্টারে জমা দেওয়ার কথা। এদিকে পণ্য বুঝে পাওয়ার পর ক্রেতা কিউকমকে টাকা দেবেন। ক্রেতা পণ্য বুঝে না পেলে ফস্টার কর্তৃপক্ষ কিউকমের টাকা আটকে দেবে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক চিঠিতে ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম জানায়, ফস্টার পেমেন্টস তাদের গ্রাহকদের ৪২০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। ফোস্টার পেমেন্টস মূলত এসএসডি টেক নামক একটি কোম্পানির পেমেন্ট সার্ভিস উইং। বাংলাদেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়া, মিয়ানমার ও সিঙ্গাপুরেও তারা রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে পণ্য দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে ৩ অক্টোবর প্রতারণার অভিযোগে কিউকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।