ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সরকার অ্যাক্রেডিটেশন অবকাঠামো ইকো-সিস্টেম নির্মাণে বদ্ধ পরিকর: শিল্পমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২২
সরকার অ্যাক্রেডিটেশন অবকাঠামো ইকো-সিস্টেম নির্মাণে বদ্ধ পরিকর: শিল্পমন্ত্রী

ঢাকা: বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্প্রসারণে পণ্য ও সেবার মান এবং গ্রহণযোগ্যতার বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এজন্য সরকার একটি কার্যকরী অ্যাক্রেডিটেশন অবকাঠামো ইকো-সিস্টেম নির্মাণে বদ্ধ পরিকর বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

 

রোববার (১২ জুন) ঢাকা চেম্বারের অডিটোরিয়ামে বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত ‘অ্যাক্রেডিটেশন; টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়তা করে’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।  

বিএবি-এর মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।  

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, পণ্যের মান ও গ্রহণযোগ্যতাই ভোক্তাদের মনে আস্থা তৈরি করে, যার মাধ্যমে বিকশিত হয় বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ। পণ্য ও সেবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে অ্যাক্রেডিটেশনের কোনো বিকল্প নেই।  

শিল্পমন্ত্রী দেশীয় ল্যাবরেটরিসমূহে আধুনিক যন্ত্রপাতির সংযোজনের মাধ্যমে পণ্যের সনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিতকরণের উপর জোর দেন। স্থানীয় পণ্য ও সেবা রফতানি সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক সনদ সংস্থাগুলোর সঙ্গে দেশীয় সংস্থার সমন্বয় খুবই জরুরি বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।  

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, সনদ প্রদানকারী সংস্থাসমূহের মান ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে কার্যকরী ভূমিকা রাখা যাবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।    

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বৈশ্বিক জলবায়ুতে নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ প্রভাব বাংলাদেশেও প্রতীয়মান। এমতাবস্থায় তিনি শিল্প উদ্যোক্তাসহ সব স্তরের মানুষকে পণ্য ও সেবার গুণগতমান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অ্যাক্রেডিটেশন কে ‘ই-পার্সপোট’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। দেশীয় পণ্যের অ্যাক্রেডিটেশন নিজ দেশই সম্পন্ন করা সম্ভব হলে রপ্তানি সম্প্রসারণের পাশাপাশি সময় ও ব্যয় দুটো হ্রাস করা সম্ভব।    

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশীয় শিল্প পণ্য ও সেবার মান উন্নয়ন, ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি সম্প্রসারণে অ্যাক্রেডিটেশনের গুরুত্ব অপরিসীম।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রায় টেকসই উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হলেও আমাদের শিল্পখাতের অবকাঠামোর টেকসই উন্নয়ন তেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় না। বাংলাদেশের রফতানিমুখী পণ্যগুলো, যেমন: চামড়া, পাট ও পাট পণ্য, প্লাস্টিক, হিমায়িত খাদ্য প্রভৃতির রফতানি আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে টেকসই ব্যবসায়িক পরিবেশ বাস্তবায়নে সরকারের নীতিমালার বাস্তবায়নের উপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। সেই সঙ্গে আমাদের টেস্টিং ল্যাবরেটরিগুলোর সনদের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের আহ্বান জানান তিনি।  

স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ পণ্য ও সেবার জন্য সাপ্লাই চেইনের প্রতিটি পর্যায়ে মান নিশ্চিতকরণ আবশ্যক, সেই সঙ্গে নিরাপদ পণ্য এবং সেবা উৎপাদনের জন্য একটি কার্যকর জাতীয় মান অবকাঠামো একান্ত অপরিহার্য।    

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। তিনি বলেন, নিরাপদ পণ্য, সেবা এবং মান নিশ্চিতকরণের বিষয়সমূহ আমাদের সবার জন্য জরুরি। সাম্প্রতিক সময়ে বিএবি একটি কার্যকরী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিতের মাধ্যমে এটিকে আরও কার্যকর করতে হবে, যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।

এর আগে 'বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস' পালন উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে মতিঝিল বক চত্বর প্রদক্ষিণ করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২২
জিসিজি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।