ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা জমানোর রেকর্ড

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা জমানোর রেকর্ড

সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ রাখা রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। এক বছর আগের তুলনায় ২০২১ সা‌লে বাংলা‌দে‌শিরা সুইস ব্যাং‌কে প্রায় তিন হাজার কো‌টি টাকার সমপ‌রিমাণ অর্থ জমা ক‌রে‌ছেন।

সব মিলিয়ে সুইস ব্যাংকগুলোতে এখন বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ আট হাজার ৩৪৫ কোটি, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালে সেখানকার ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা রাখা অর্থের অংক প্রায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা, যা এযাবৎকালের রেকর্ড।  

এসএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর সুইজারল্যান্ডের শতাধিক ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত ৮৭২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁতে পৌঁছেছে। সুইজারল্যান্ডের প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশের ৯৫ টাকার সমান। সেই হিসাবে সেখানকার ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা।

বিশ্বের ধনীদের বৈধ-অবৈধ অর্থ রাখার নিরাপদ জায়গা হিসেবে সুইজারল্যান্ডের খ্যাতি দীর্ঘদিনের। গ্রাহকদের নাম-পরিচয় গোপন রাখার ক্ষেত্রে কঠোর নীতির কারণে ধনীসহ অর্থ পাচারকারীদের প্রথম পছন্দ দেশটির ব্যাংকগুলো। নির্দিষ্ট গ্রাহকের তথ্য না দিলেও এক দশক ধরে এ বিষয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে নানাভাবে অবৈধ উপায়ে পাচার হওয়া অর্থ যেমন সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা হয়, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও দেশটিতে অর্থ জমা রাখেন। তাই সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশিদের অর্থের মধ্যে কত টাকা অবৈধ তা নিরূপণ করা কঠিন।

গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০২ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত ছিল মাত্র তিন কোটি ১০ লাখ ফ্রাঁ। দুই দশকে তা বেড়েছে প্রায় ৩০ গুণ। বৃদ্ধির হারও সবচেয়ে বেশি ছিল ২০২১ সালে।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি হারে। সুইস ব্যাংকে ভারত ও পাকিস্তানের অর্থও আগের বছরের চেয়ে ২০২১ সালে বেড়েছে। ভারতের নাগরিকদের রয়েছে ৩৮৩ কোটি ফ্রাঁ, যা ২০২০ সালে ছিল ২৫৫ কোটি ফ্রাঁ। পাকিস্তানের আছে ৭১ কোটি ফ্রাঁ, আগের বছর যা ছিল ৬৪ কোটি ফ্রাঁ। তবে শ্রীলঙ্কা ও নেপালের অর্থের পরিমাণ কমেছে।

সুইস কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, যদি কোনো বাংলাদেশি তার নাগরিকত্ব গোপন করে অর্থ জমা রেখে থাকেন, তবে ওই টাকা এই হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। গচ্ছিত রাখা সোনা বা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমানও হিসাব করা হয়নি প্রতিবেদনে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য অনুসারে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে থাকে ৭১ হাজার কোটি টাকা। ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর আগে প্রকাশিত পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে ৮৪ জন বাংলাদেশির টাকা পাচারের তথ্য উঠে আসে। এর বাইরে সেকেন্ড হোমসহ নানা মাধ্যমে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে দেদার পাচার হয়ে যাচ্ছে অর্থ।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।