ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেশি লাভের আশায় ধান-চাল মজুদ, বাজারে কৃত্রিম সংকট

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
বেশি লাভের আশায় ধান-চাল মজুদ, বাজারে কৃত্রিম সংকট

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন মোকামে বেড়েছে ধান-চালের দাম। তেলের দাম বাড়তেই হঠাৎ করে অস্থির হয়ে উঠেছে বাজার।

চালকল মালিকরা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের জন্য হাজার হাজার মণ চাল মজুদ করে রেখেছেন। এতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।  

জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২৪টি অটোরাইস মিল রয়েছে। এসব মিলে প্রতিদিন ১৪৪ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হচ্ছে। এসব চাল ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফেনীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।  

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চালের বাজারে অস্থিরতার জন্য এসব মিল মালিকরাই দায়ী। সরকারের দুর্বল মনিটরিংয়ের জন্য মিল মালিকরা হাজার হাজার মণ চাল মজুদ করে বাজারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন।

সাধারণ লোকজন বলেন, ধান-চালের বাজার একেবারে লাগাম ছাড়া। অল্প টাকা আয়ে বেশি দামে চাল কেনার পর সংসারে অন্য জিনিস কিনতে কষ্ট হয়ে যায়। যারা ধান-চাল যারা মজুদ করে রেখেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সরকার যদি মনিটরিং করে, তাহলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন মোকামে বেড়েছে সব ধরনের ধান-চালের দাম। মোকামে প্রতি মণ ধানের দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। সেই সঙ্গে বেড়েছে চালের দামও।

এক সপ্তাহ আগে বিআর/২৮ ধান- ১১২০ থেকে ১১৩০ টাকা ও বিআর/২৯ ধান ১০৭০ থেকে ১০৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিআর/২৮- ১২৮০ ও বিআর/২৯ ধান-১২৫০/১২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে।  

এদিকে চালের পাইকারি বাজারে বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা বাড়লেও খুচরা বাজারে কেজি প্রতি বেড়েছে চার টাকা। মাত্র এক সপ্তাহে আগেও পাইকারি বাজারে প্রতি মণ বিআর ২৮ চাল ২৫০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে ২৭০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিআর -২৯ চাল ২৩৩০ থেকে ২৩৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে ২৬৮০ থেকে ২৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও।

ধান-চাল মজুদের বিষয়ে জানতে চাইলে এস আলম অ্যাগ্রো ফুডের মালিক শাহ-আলম বাংলানিউজকে বলেন, কোনো রাইস মিলে চাল মজুদ নেই। ধান সংগ্রহ করতেই আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি বাবুল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধিসহ চালকল মালিকদের অতিরিক্ত মুনাফা লাভের প্রবণতার জন্যই ধান-চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন অটোরাইস মিলে হাজার হাজার চালের বস্তা মজুদ করে রাখা হয়েছে। সরকার যদি মনিটরিং করে, তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কাউসার সজিব বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় প্রায় ২৪ হাজার মেট্রিক টন ধান-চাল মজুদ রয়েছে। খাদ্যবান্ধব কমসূচির আওতায় আগামী মাস থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৫ টাকা দরে চাল বিক্রি শুরু হবে। ধান-চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ মনিটরিং জোরদারের পাশাপাশি শিগগিরই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।