ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পোল্ট্রির বাজার কারা অস্থির করলো জানতে চায় এফবিসিসিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
পোল্ট্রির বাজার কারা অস্থির করলো জানতে চায় এফবিসিসিআই

ঢাকা: দেশে ডিম ও পোল্ট্রি বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে গত ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে ব্যবসায়ীরা এমন দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছিল বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নিয়ে এক মত বিনিময় সভায় দোষীদের তথ্য জানতে চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

সোমবার (২২ আগস্ট) এফবিসিসিআই বোর্ড রুমে ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বাজার ও মূল্য পরিস্থিতি’ নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানতে চায় সংশ্লিষ্টরা।

এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সংবাদ সম্মেলন করে বলে ১৫ দিনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত মুনাফা করেছে পোল্ট্রি কোম্পানিগুলো। এটা কি মনগড়া মন্তব্য? মন যা চাইল তাই বলে দিল, তা তো হবে না। কোনো তথ্য দিলে তা অবশ্যই বাস্তবসম্মত হতে হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, জন্মাষ্টমীর দিন থেকে নিয়ে টানা তিনদিন সারা দেশে অভিযান করা হয়েছে। এর পেছনে কারা আছে তাদের খোঁজ বের করার চেষ্টা হচ্ছে। এফবিসিসিআই একটা বহুমুখী সৎ ব্যবসায়ীদের সংগঠন। কিছু অসাধু লোকের জন্য যেভাবে সমাজে ব্যবসায়ীদের অসৎ তকমা দেওয়া হচ্ছে তা সত্যিই দুঃখজনক।

তিনি আরও জানান, ভোক্তার অভিযানে কয়েকদিনেই ডিমের হালিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় নেমে এসেছে। তাহলে স্পষ্ট বুঝা যায় ডিম নিয়ে ম্যানিউপুলেট করা হয়েছে। আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে মামলার দিকে যাবে।

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, দেশে ভোক্তা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রিত তিনটি বৈধ সংগঠন আছে। বাংলাদেশ এগ প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অর্গানিক প্রোডাক্ট মেনুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। এগুলো বৈধ অ্যাসোসিয়েশন।

সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বিশ্বে জালানি তেলের দাম বাড়ার ফলে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন তা মানলাম। কিন্তু আপনারা এফবিসিসিআইয়ের কাছে আসেন না কেন। এসে আলোচনা করুন। আপনারা লস করলে আমাদের বলুন। কীভাবে সেটা থেকে উত্তরণ করা যায় আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব। অনেক প্রতিষ্ঠান আছে এ মন্দা সময়েও ভালো করছে। ব্যবসা লাভ লসের মধ্যেই চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে এ ঘটনায় বিভিন্ন মহল থেকে আমি হাজারও প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। সুযোগ পেলেই দাম বাড়ানোর প্রবণতা, এটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমরা ব্যবসায় করতে এসেছি, করব। মুনাফাও করব। তার অর্থ এই না যে আমরা মনমত বাড়াবো।

বাংলাদেশ এগ প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বলা হয়, একটি পক্ষ দাদন দেওয়ার মাধ্যমে গুদামজাতকারীদের হাত করে নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে নিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এর আগে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন দাবি করে, ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে দেশের পোলট্রি কোম্পানিগুলো।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানান, দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা ৪ কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে কোম্পানিগুলো উৎপাদন করে ২ কোটি ৫০ লাখ। আর খামারিরা উৎপাদন করেন ১ কোটি ৩০ লাখ।

কর্মকর্তাদের দাবি, কোম্পানিগুলো প্রতিটি ডিমে অতিরিক্ত ৩ টাকা বেশি মূল্য নির্ধারণ করে। এতে গত ১৫ দিনে তারা শুধু ডিম থেকে ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে।

পোলট্রি খামারিরা জানান, প্রতিদিন ১৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি মুরগির মাংস কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এবং পরবর্তী সময়ে তা বাজারে ছেড়ে প্রতি কেজিতে বাড়তি নেওয়া হয়েছে ১৫ টাকা। এর ফলে কোম্পানিগুলো গত ১৫ দিনে ১৭২ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে।

সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। সভায় পোল্ট্রি ও ডিমের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও এফবিসিসিআই এর বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
এমকে/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।