ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সৈয়দপুর পৌরসভায় মানুষের মল থেকে তৈরি হচ্ছে সার

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
সৈয়দপুর পৌরসভায় মানুষের মল থেকে তৈরি হচ্ছে সার

নীলফামারী: পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া-মহল্লার বাড়ি থেকে কন্টেইনারে সংগ্রহ করা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। ভ্যাকু ট্যাগ মেশিনে সংগ্রহ করা হচ্ছে ল্যাট্রিনের মল ও বর্জ্য।

আর পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা তা ফেলছেন ফেইকাল স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে।  

সেখানে বিশেষ কায়দায় ও রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে উন্নতমানের জৈব সার। এতে করে সৈয়দপুর পৌরসভার আয় বেড়েছে এবং মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
 
শুরুটা ২০১৬ সালে। সে সময়কার সাবেক মেয়র প্রয়াত অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন সরকার ওয়াটার এইড ও এসকেএস বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চুক্তি করেন। পৌরসভার পুরুষ ও নারী কাউন্সিলর এবং সংশ্লিষ্ট পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শিল্পে  সমৃদ্ধ ঘনবসতিপূর্ণ প্রথম শ্রেণির সৈয়দপুর পৌরসভা  এমনিতেই অপরিচ্ছিন্ন। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা, যত্রতত্র গৃহস্থালীর বর্জ্য জমে থাকায় এমনিতেই দুর্গন্ধময় শহর। সমন্বিত স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও পরিচ্ছন্ন  শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে সৈয়দপুর পৌরসভা দু’টি বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় মানববর্জ্য ও গৃহস্থালীবর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণের কাজ শুরু করে। বর্তমানে এ স্লাজ ট্রিটমেন্ট
প্ল্যান্ট থেকে তৈরি হচ্ছে কো-কম্পোজ জৈব সার।  

১৭০ শতক জমির ওপর গড়ে ওঠা ফেইকাল স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে মানববর্জ্য ও গৃহস্থলীর বর্জ্যকে শোধনাগারে পাঁচটি ধাপে কো-কম্পোজ জৈব সারে রুপান্তর করা হয়। বর্তমানে পৌর এলাকার ১৮ হাজার ৮০০টি বসত-বাড়ির ২৮ হাজার ৯৪২টি পরিবারের  মধ্যে তিন হাজার ৬৬০টি পরিবারের ও তিনটি হাট-বাজারের মানববর্জ্য ও গৃহস্থালীবর্জ্যকে ভ্যাকু ট্যাগ ও ভ্যানে করে সংগ্রহ করে শোধনাগারে এনে সার বানানো হচ্ছে।  

শোধনাগারে উৎপাদিত কো-কম্পোজ জৈব সার কৃষকদের মধ্যে বিক্রি করা শুরু হয়েছে। জমিতে এ সার ব্যবহার করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

ওয়াটার এইডের প্রোগ্রাম অফিসার সুমন কুমার সাহা বলেন, সৈয়দপুর পৌরবাসীর প্রতিদিনের কঠিন বর্জ্য ও মল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একটি সমন্বিত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি সৈয়দপুর পৌরসভাকে।

সৈয়দপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মমতা সাহা বলেন, এ কো-কম্পোজ জৈব সার আমরা পৌর এলাকাসহ পাঁচটি ইউনিয়নের পুষ্টি বাগানে ব্যবহার করে উপকার পেয়েছি। এতে করে ফলন ভালো এবং মাটির স্বাস্থ্য ভালো হয়েছে।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসকেএসের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর নজরুল ইসলাম তপাদার বলেন, আমরা সৈয়দপুর পৌরসভাকে পরিচ্ছন্ন, সুন্দর ও মডেল নগর হিসেবে গড়ার লক্ষ্যেই এখানে কাজ করছি।

সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আক্তার জাহান বেবী বলেন, মানব ও গৃহস্থালীর বর্জ্যকে পণ্যে পরিবর্তন করাসহ শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে আমরা নিয়োজিত আছি। এক লাখ ৩২ হাজার জনসংখ্যার সৈয়দপুর পৌরসভায় পিট ল্যাট্রিন রয়েছে নয় হাজার ৫৪৫ ও সেপটিক ট্যাংক রয়েছে আট হাজার ৩৫৭টি। প্রতিদিন বসত-বাড়ি থেকে বর্জ্য পাওয়া যায় ৩৭.৩৫ মেট্রিক টন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।