ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে শাবিপ্রবি শিক্ষকের বই প্রকাশ

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে শাবিপ্রবি শিক্ষকের বই প্রকাশ ড. মো. আশ্রাফুল করিম

শাবিপ্রবি (সিলেট): বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশ্রাফুল করিমের ‘বৃহত্তর সিলেটের চা শ্রমিকদের কৃত্য-নৃত্য-ভাষা ও সংস্কৃতি’ শীর্ষক গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে বইটির রচয়িতা অধ্যাপক ড. মো. আশ্রাফুল করিম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আগামী একুশে বইমেলায় শিল্পকলা একাডেমির নিজস্ব স্টলে বইটি পাওয়া যাবে।     

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ১৬৭টি চা বাগানের মধ্যে প্রায় ১৩৫টি চা বাগান (হবিগঞ্জ-২৫, মৌলভীবাজার-৯১ এবং সিলেট-১৯) বৃহত্তর সিলেটে গড়ে উঠেছে। এ সব চা বাগানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রায় কয়েক লাখ চা শ্রমিক যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। চা বাগানে বসবাসরত চা শ্রমিকদের আদি আবাসস্থল ভারতের আসাম, বিহার, উড়িষ্যা, মাদ্রাজ, পশ্চিমবঙ্গ, গৌহাটি, ছোটনাগপুর, উত্তর প্রদেশ ও মধ্য প্রদেশ। তাদের রয়েছে— স্বতন্ত্র নৃতাত্ত্বিক, ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি নানান লোকজ সংস্কার, কৃত্যমূলক নৃত্য, স্বতন্ত্র ভাষা, সংগীত, লোকক্রীড়া, লোকবিশ্বাস, লোকচিকিৎসা, লোকসাহিত্য ইত্যাদি সুবিশাল সম্ভার। অথচ এ সব চা শ্রমিকদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির সামগ্রিক রূপটি বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে অনেকটাই অজানা থেকে গেছে কেননা এদের নিয়ে আজ পর্যন্ত তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য পদ্ধতিগত গবেষণা হয়নি। তবে এ গ্রন্থটি সেই শূন্যতাকে অনেকাংশে পূরণ করবে ।

তিনি আরও বলেন, চা বাগানের সংস্কৃতি মূলত বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী-ধর্ম-উৎসব-পুজোপার্বণকেন্দ্রিক সংস্কৃতি। এ ধরনের সংস্কৃতি প্রায়ই ধর্মাচরণ প্রভাবিত এবং চা শ্রমিকদের আদি উৎস ভূমির আচার-আচরণ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মাঠ পর্যায়ে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের সাহায্যে এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত পাঁচটি অধ্যায় এবং তিনটি পরিশিষ্টে চা শ্রমিকদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির নানান দিক নিয়ে নিবিড় পরিচর্যা ও অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে তথ্যনিষ্ঠ বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হয়েছে।

ড. আশ্রাফ বলেন, মূলত চা শ্রমিকদের নিয়ে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা নেই বললে অত্যুক্তি হবে না। ‘বৃহত্তর সিলেটের চা শ্রমিকদের কৃত্য-নৃত্য-ভাষা ও সংস্কৃতি’ গ্রন্থটিতে বৃহত্তর সিলেটের চা শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তাত্ত্বিক দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়েও আলোচনা সন্নিবেশিত হওয়ায় সব শ্রেণির পাঠক ও গবেষকের পক্ষে একসঙ্গে চা শ্রমিকদের বিষয়ে সার্বিক দিক জানাতে পারবেন বলে জানান তিনি।

এছাড়াও বৃহত্তর সিলেটের চা শ্রমিকদের কৃত্য-নৃত্য-ভাষা ও সংস্কৃতি গ্রন্থটি ভাষা ও সাহিত্য, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি, ইতিহাস, সঙ্গীত, নৃত্যকলা, নাট্যকলার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকদের গবেষণার কাজে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ড. আশ্রাফুলের প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থগুলো হলো লাল সবুজ পতাকা (কাব্য, ২০১০), মীর মশাররফ হোসেনের বিষাদ-সিন্ধু [সম্পা.] (২০১০), জিলাপি (নাটক, ২০১২), ভাষার নানারূপ (গবেষণা-গ্রন্থ, ২০১৪), বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা সুনামগঞ্জ [প্রধান সমন্বয়কারী], (২০১৪), নীলাকাশে কালো মেঘ (নাটক, ২০১৫),  ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠ নাট্য-মীর মশাররফ-কায়কোবাদ এবং (গবেষণা-গ্রন্থ, ২০২১), রবীন্দ্র-নজরুল (গবেষণা-গ্রন্থ, ২০২২)।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৩
এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।