ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

ছাত্রীকে প্রশ্ন সরবরাহের অভিযোগ জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
ছাত্রীকে প্রশ্ন সরবরাহের অভিযোগ জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, (জবি): পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জুয়েল কুমার সাহার বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে সেমিস্টার ফাইনালের প্রশ্ন সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ছাত্রী ও শিক্ষক উভয়ের শাস্তির দাবি করেছেন বিভাগের অপর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার বিষয়ে বিভাগের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জুয়েল কুমার সাহা স্নাতকের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীকে তার নিজ কোর্স ‘ক্লাসিকাল ইলেক্ট্রো ডাইনামিকস: ১’সহ আরও বেশ কয়েকটি কোর্সের প্রশ্ন সরবারহ করেন। ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর এ কোর্সের মানোন্নয়ন পরীক্ষা চলার সময় ওই ছাত্রী নকলসহ ধরা পড়েন। তার নকলের সঙ্গে প্রশ্নের অধিকাংশ উত্তর মিল থাকায় বিভাগের শিক্ষকরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তিনি জুয়েল সাহার ব্যাপারে জানান।

এ ঘটনায় পরে বিভাগীয় একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে ঐ শিক্ষককে সকল-ক্লাস পরীক্ষা থেকে ৩ বছরের জন্য মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে তাকে অফিসিয়াল কোনো শাস্তির মুখোমুখি করা হয়নি। অজানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। এ শাস্তি দেওয়ার আগে কয়েক দফা বৈঠকও করেন শিক্ষকরা।

এ ঘটনায় বিভাগের এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি খুবই সেনসিটিভ হওয়ায় আমি চাইব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থা করুক। তদন্তে প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি থাকবে। পাশাপাশি ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধেও যেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা বাংলানিউজকে বলেন, এটা বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয় দেখিয়ে চেয়ারম্যান আমাদের কাছ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ নেননি। এরপর বিভাগের সকল শিক্ষকদের নিয়ে একাডেমিক মিটিং এ মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষককে তিন বছরের জন্য ক্লাস পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই শাস্তির বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত নির্দেশনা জানতে চাওয়া হলে তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

ঘটনাটি নিয়ে বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. কানিজ ফাতেমা কাকলী বাংলানিউজকে বলেন, আমি বিষয়গুলো জানার পরই বিভাগের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তারপর তাকে লিখিত অভিযোগের কথা বললে তিনি বিভাগের বিষয় বিভাগেই সুরাহা করতে বলেন। তাই আর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয় নি।

এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান নূর আলম আবদুল্লাহর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ না আসায় আমি একাডেমিক শাস্তি কার্যকর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অবিহিত করতে পারিনি।

অভিযোগের বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক জুয়েল সাহার সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আজ (বৃহস্পতিবার-৯ ফেব্রুয়ারি) আমি জেনেছি। এ সম্পর্কে বিভাগে খোঁজ নেব। পরে তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একাডেমিক বিষয়ে আমরা সবসময় জিড়ো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করি। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।