ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

থমথমে রাবি, চাপা উত্তেজনা, আহতরা হাসপাতালে 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৩
থমথমে রাবি, চাপা উত্তেজনা, আহতরা হাসপাতালে 

রাজশাহী: স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাতে সংঘর্ষ থামলেও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

সংঘর্ষের ঘটনায় আজ রোববার (১২ মার্চ) ও আগামীকাল সোমবারের (১৩ মার্চ) সব ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, বিনোদপুর বাজার এবং এর আশপাশের এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।  

সংঘর্ষে রাবি শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, পুলিশ ও ব্যবসায়ীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৮৬ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

এর মধ্যে রাবি শিক্ষার্থী রাকিব আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাবি ক্যাম্পাস এবং এর আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, রাবিতে সংঘর্ষের ঘটনায়  রাতে ৮৬ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ রাবি শিক্ষার্থী। এর পাশাপাশি পুলিশ ও সাধারণ মানুষজনও আছেন। তাদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি জানান, এর মধ্যে এক শিক্ষার্থীকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও সাতজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের শরীরে রাবার বুলেটের চিহ্ন আছে। অন্যরাও বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, তারা ছাত্রদের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিকভাবে খোঁজ-খবর রাখছেন। সব ছাত্র যেন চিকিৎসা পান, সেটি দেখভাল করছেন। তবে ছাত্রদের সবার অবস্থাই এখন আগের চেয়ে স্থিতিশীল।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর অনিবার্য কারণবশত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোববার ও সোমবারের সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আগামী ১৪ মার্চ মঙ্গলবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ যথারীতি চলবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তারের এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, গতকাল রেলপথ অবরোধের কারণ অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নির্ধারিত সময়ের প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে আন্তঃনগর ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস। ট্রেনটি শনিবার (১১ মার্চ) দিনগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে। ট্রেনটি ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল ১১টা ২০ মিনিট। তবে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভোর থেকে ঢাকাসহ সকল রুটের ট্রেন নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে গেছে জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম।

এ ঘটনায় রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুর রহমান নিজেই গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান করেন। তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও বিনোদপুরসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই মামলা করেনি। তবে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শনিবার (১১ মার্চ) বিকেল পাঁচটা থেকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। রাত প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনার পর সেখানে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২১ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৩

এসএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।