ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা কিশোর গ্যাংয়ের

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৩
জবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা কিশোর গ্যাংয়ের জবির আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছবি: বাংলানিউজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। ক্যাম্পাস থেকে দূরে গেন্ডারিয়া এলাকায় তারা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

 

এ ঘটনায় অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার সময় ওই এলাকায় পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আহত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে গেন্ডারিয়ার মুরগিটোলা মোড় এলাকায় প্রথম দফায় ও ১১টার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে শিক্ষার্থীদের। তখন এক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় দুজনকে আটক করে সূত্রাপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পরে রাত ১১টার দিকে আবু সুফিয়ান ও শিহাব নামের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় মুরগিটোলা মোড়ে চা খেতে গেলে হঠাৎ ৫০ থেকে ৬০ জন স্থানীয় কিশোর গ্যাং এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। পরে ওই দুই শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায় তারা। এসময় তাদের চিৎকারে আরও আশেপাশে অবস্থান করা আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে তাদের ওপরও আক্রমণ করে স্থানীয়রা। এতে অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত একজন শিক্ষার্থীকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গুরুতর আহত সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, আমি চা খাওয়ার জন্য আমার বন্ধুর সঙ্গে বের হয়েছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় কয়েকজন এসে আমাদের আটকে কোথায় থাকি জিজ্ঞেস করে। বানিয়ানগর থাকি বলতেই আমাদের ওপর অনেকগুলো ছেলে আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টি-শার্ট পরিহিত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিয়ে গালিগালাজ করতে থাকে আর মারতে থাকে। আমরা আগের ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।

তবে ঘটনার সময় পুলিশের নিরব ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশ এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।  

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালেও পাশে অবস্থান করা পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখেছে। হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে যায়নি পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন মিলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালালেও ঘটনাস্থলে ১০-এর অধিক পুলিশ অবস্থান করছিল।  

হামলার শিকার শিহাব নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের মারধর করার পর পুলিশ এসে থামায়। কিন্তু বলতে থাকে তোরা জগন্নাথের স্টুডেন্ট এখানে আসছিস কেনো? এই কথা বলেই পুলিশ আমাকে মারতে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমি বিষয়‌টি জানার পর আহত‌দের চি‌কিৎসার জন‌্য ব‌্যবস্থা ক‌রে দি‌য়ে‌ছি। আর সুত্রাপুর ও গেন্ডা‌রিয়া দুই থানার ওসির সঙ্গেই কথা বলে‌ছি। থানায় অভি‌যোগ দি‌লে অভিযুক্তদের বি‌রুদ্ধে ব‌্যবস্থা নেবে। আর পু‌লিশ‌ যে শিক্ষার্থী‌দের ওপর হাত তু‌লে‌ছে সেই ভি‌ডিওটিও ওসি‌কে দি‌য়ে‌ছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গেন্ডারিয়া থানার ওসি মো. আবু সাঈদ আল মামুন বলেন, এটা সূত্রাপুর থানার অধীনে। তবে ঘটনার সময় সেখানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা ছিল। তারা মারামারি থামিয়ে দিয়েছে। পরে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে এ ঘটনায় আমাদের এখানে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সূত্রাপুর থানায় ওসি মো. মইনুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় ভিকটিম এখনো আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। কোথা থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে তা ভিকটিম আসলে তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারবো। আর যেই দুজনকে আটক করা হয়েছিল তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তাই তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৩
এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।