ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে শিক্ষার্থীদের অনশন অব্যাহত: অসুস্থ ৫

জাবি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১২

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন অব্যাহত রয়েছে।

অনশনরত ৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে শনিবার ৫ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বর্তমানে ৩ শিক্ষার্থীর অনশনে অনড় রয়েছেন।

অপরদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ‘শিক্ষক সমাজ’  তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে।

সাংস্কৃতিক কর্মীদের মারধরের ঘটনায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ‘জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট‘ ও ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের শিক্ষার্থীরা ১ মে থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

প্রথম দিকে, ৪ শিক্ষার্থী অমরণ অনশন শুরু করলেও আস্তে আস্তে তা বেড়ে ৮ জনে দাঁড়ায়।

এর মধ্যে শুক্রবার ৪ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের সাভারের এনাম মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে ২ মে অনশনরত আরেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাকেও এনাম মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

যাদের এনাম মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে, তারা হলেন- রাসেল রানা, সাদিয়া জাফরিন, মইনুল হক, জুবায়ের ইসলাম, আতিয়া ফেরদৌস চৈতি।

বর্তমানে উপাচার্য বাসভবনের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন- রিদম রহমান চৈতি, মোমেনা ইসলাম রিতু ও দেবাংশু ঘোষ শুভ।

এদিকে যতক্ষণ পর্যন্ত উপাচার্য পদত্যাগে না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ‘আমরণ অনশন চলবে’ বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।  

তাদের দাবি মানা না হলে আমরণ অনশনে শিক্ষার্থীরা সংখ্যা দিন দিন বাড়বে এবং একসময় এ অনশন গণঅনশনে পরিণত হবে বলে জানান তারা।

তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসের কথা তারা শুনেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রতি তারা বিশ্বাস ও ভরসা রাখছেন।

তবে যেহেতু অনশনকারীরা একটি শপথ নিয়ে অনশন শুরু করেছেন, সেহেতু শপথের মর্যাদা রাখতে এই মুহূর্তে তারা অনশন ভাঙবেন না। তারা আশা করছেন, খুব শিগগিরই রাষ্ট্রপতি একটি সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের অনশন ভাঙাবেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে উপাচার্য বিরোধী ‘শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারের শিক্ষকরা কথা বলেছেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের হতাশ করবেন না বলে আশ্বাস দেন। সেই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন ‘শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারের শিক্ষকরা।

এবিষয়ে ‘শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারের শিক্ষকরা বলেছেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কথার প্রতি আস্থা রেখে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর যেন হামলা না হয়, সেই কথা ভেবেই আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই এখানে কিছু শিক্ষক অবস্থান করছি। এটি আমাদের কোনো কর্মসূচি নয়। আমরাও আশা করছি, দাবি মেনে নিয়ে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য খুব শিগগিরই আমাদের একটি সমাধান দেবেন। ’

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ১১ দফা দাবিতে ‘জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট’-এর নেতাকর্মীদের আন্দোলন চলাকালে ২৮ মার্চ শনিবার বিকেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীদের মারধর করেন।

এতে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি কলি মাহমুদ ও সহসভাপতি মঈন মুনতাসিরসহ ৭ সাংস্কৃতিক কর্মী আহত হন।

এ ঘটনার জের ধরে রোববার দুপুরে ‘জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট’-এর ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।

এরপর সংবাদ সম্মেলন করে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন এবং হামলাকারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও আজীবন বহিস্কার দাবি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১২
সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।