ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইফতারি বর্জ্যে সয়লাব জাবির কেন্দ্রীয় মাঠ

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
ইফতারি বর্জ্যে সয়লাব জাবির কেন্দ্রীয় মাঠ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: চলমান রমজানকে কেন্দ্র করে সবুজ ঘাসে মোড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গল্প-আড্ডায় জমে ওঠে ইফতারের আমেজ। তবে ইফতার শেষেই দেখা যায় এর ভিন্ন চিত্র।

কাগজ পলিথিন ও খাবারের উচ্ছিষ্ঠে খেলার মাঠটি যেন পরিণত হয় এক ময়লার ভাগাড়ে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ইফতারের সময় হওয়ার কিছুক্ষণ আগে থেকেই শুরু হয় কিনে আনা খাবারের ইফতার আয়োজন। গল্প-আড্ডায় চলতে থাকে সম্প্রীতির ইফতার। কিন্তু ইফতার শেষে খাবারের উচ্ছিষ্ঠ, পলিথিন, পত্রিকা ও প্লাস্টিকের প্লেট-গ্লাসের বর্জ্য পরিষ্কার করার কোনো পদক্ষেপ দেখা যায় না কারোরই। ফলে মাঠের সবুজ ঘাসগুলো ঢাকা পড়েছে সাদা পলিথিন আর কাগজ দিয়ে।

এছাড়া বর্জ্য পরিষ্কারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার উদ্যোগ না নেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা আশা বলেন, রমজান মাসে ক্যাম্পাসে ইফতারের মাধ্যমে পরিবারের সাথে ইফতার করার কথা একটু হলেও ভুলে থাকা যায়। আমি মনে করি, এই ক্যাম্পাস আমাদের সেকেন্ড হোম। আমরা নিশ্চয়ই আমাদের বাড়িতে ইফতার বা খাবার খেয়ে এমন অপরিষ্কার রাখি না। তাই এই ক্যাম্পাসেরও সৌন্দর্য রক্ষা ও পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব আমাদেরই। আমাদের উচিৎ প্রশাসনের সহযোগিতায় সম্মিলিতভাবে ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাসের ইফতার আমাদের প্রাণের সঙ্গে প্রাণের সঞ্চার ঘটায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্যাম্পাসের ইফতারে তৃপ্তি খুঁজে পাই। কিন্তু ইফতার শেষে নিজের খাবারের উচ্ছিষ্ঠ না তোলাটা বড় অবিবেচকের পরিচয়। ইফতারের আবর্জনায় খেলার মাঠটি খেলাধুলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ আমাদের দায়িত্বে না। তারপরও যারা কাগজ সংগ্রহ করেন তাদেরকে পাঠাবো এগুলো পরিষ্কারের জন্য।

অন্যদিকে এ ব্যাপারে শারীরিক শিক্ষা অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বেগম নাছরীন বলেন, এটা এস্টেট অফিসে কাজ। আমরা এখন পানি দিয়ে খেলার মাঠের ঘাসের অবস্থা ভালো রাখার চেষ্টা করছি। এই বন্ধের সময়ে আমাদের আর বেশি কিছু করার সুযোগ নেই। আমাদের জনবল সংকটের মাঝে আবার অনেকেই অসুস্থ।

নন ফুড গ্রেড প্লাস্টিকের ব্যবহারের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে পাবলিক হেল্থ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তাজউদ্দিন সিকদার বলেন, বর্তমানে যে কোন খাবার আয়োজনে ওয়ান টাইম প্লেট-গ্লাস ব্যবাহারের পরিমাণ বেড়েছে। এই প্লেট-গ্লাস ফুড গ্রেডেড না। এছাড়া এটি অপাচ্য। এসব প্লাস্টিক ব্যবহারে জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষভাবে দায়ী। তাই, শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এর ব্যবহার কমাতে হবে এবং ক্যাম্পাসের প্রকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।