ঢাকা: তিনটি জেলার নির্ধারিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত এক জরিপের তথ্য বলছে, সেখানকার এক–তৃতীয়াংশের বেশি শিক্ষার্থী ‘প্রাইভেট টিউটরের’ কাছে পড়ে।
আর প্রাইভেট টিউটরের কাছে না পড়লে শিক্ষার্থীরা ‘অপ্রত্যাশিত সমস্যায়’ পড়তে হয়।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম দেশের উত্তরাঞ্চলের তিনটি জেলা গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারীর ৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০৮ জনের ওপর জরিপ করে এসব তথ্য পেয়েছে। আরও কিছু তথ্য এই জরিপে উঠে এসেছে।
রোববার (২৫ জুন) রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে এক জাতীয় সম্মেলনে এই জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ‘প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি বিনিয়োগ, স্থানীয় অভিজ্ঞতা ও করণীয়’ শীর্ষক এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
সম্মেলনে জরিপের ফল নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডিরি জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। প্রবন্ধে বলা হয়, দারিদ্র্যের হার গাইবান্ধায় জাতীয় হারের প্রায় দ্বিগুণ। ঠাকুরগাঁও জেলায় এই হার জাতীয় হারের চেয়ে কম হলেও নীলফামারীতে আবার তা জাতীয় হারের চেয়ে প্রায় ৮ শতাংশ বেশি। ঠাকুরগাঁও জেলায় সাক্ষরতার হার জাতীয় হারের বেশি হলেও গাইবান্ধা ও নীলফামারীতে তা জাতীয় হারের চেয়ে কম। আবার গাইবান্ধা জেলায় বাল্যবিবাহের হার জাতীয় হারের চেয়ে প্রায় ১১ শতাংশ বেশি।
জরিপ করা ৩০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টিতে ৫টির কম শ্রেণিকক্ষ রয়েছে, যা প্রয়োজনের চেয়ে কম। আর শিক্ষকের গড় সংখ্যা ৬। সেখানকার শিক্ষার্থীর বিবেচনায় গড়ে ২৯ শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন শিক্ষক আছেন, যা জাতীয় হারের চেয়েও কম। কিন্তু সমস্যা হয় যখন কোনো শিক্ষক বদলি হন বা অনুপস্থিত থাকেন। তখন ক্লাস নিতে সমস্যা হয়। অন্যদিকে বিদ্যালয়গুলোতে অফিস সহায়ক না থাকায় প্রধান শিক্ষকের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এর ফলে তিনি পাঠদান ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন না।
জরিপের তথ্য বলছে, ছাত্রছাত্রীদের জন্য পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ অংশীজন। জরিপ করা ৩০ বিদ্যালয়ের মধ্যে ২২টিতে কোনো ধরনের গ্রন্থাগারের ব্যবস্থা নেই। ইংরেজি ও গণিত শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিশেষ দুর্বলতার কথা জানিয়েছেন জরিপে অংশ নেওয়া অধিকাংশ উত্তরদাতা।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৩ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২৩
এইচএমএস/আরএইচ