ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

সঠিক বিচার পাইনি, ফিরে এসে তারা প্রতিশোধ নেবে: ফুলপরী

ইবি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২৩
সঠিক বিচার পাইনি, ফিরে এসে তারা প্রতিশোধ নেবে: ফুলপরী

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে বহুল আলোচিত নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে র‍্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের ঘটনার পাঁচ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  

নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ তার চার সহযোগীকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তবে এ সিদ্ধান্তে সঠিক বিচার পাননি বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতা ছাত্রী ফুলপরী খাতুন।

শনিবার (১৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের ২০২ নম্বর কক্ষে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমের কাছে ফুলপরী নিজের অসন্তোষের কথা জানান। এসময় আতঙ্কের কথাও জানান।

ফুলপরী খাতুন বলেন, 'তারা আমার ওপর যে পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে তাতে তাদের এক বছরের শাস্তি কোনোভাবেই হতে পারে না। এতে আমি সন্তুষ্ট না বরং আরও আতঙ্কিত। কারণ, তারা এক বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে আমার ওপর প্রতিশোধ নেবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর আমি মনে করি, আমি সঠিক বিচার পাইনি। আমি চাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হোক।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সভায় উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি এবং হাইকোর্টের নির্দেশে করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট কোড অব কন্ডাক্ট এর আলোকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অন্তরাসহ অভিযুক্ত পাঁচজনের প্রত্যেককে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট-১৯৮৭ এর পার্ট-২ ধারা-৮ মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি এক (১) বছরের জন্য ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়।

অন্তরাসহ বহিষ্কার আদেশ পাওয়া চার শিক্ষার্থী হলেন- ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী। চারজন ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপরদিকে অন্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, গত ১১ ও ১২ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফুলপরী নামে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ও মোয়াবিয়া, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম ও ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মীর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট কর্তৃক পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট হয়। ফলে হাইকোর্টের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। পরে তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা উঠে এলে অভিযুক্তদের হল এবং শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।