ঢাকা: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ১১০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দিয়েছে রাশিয়া।
এ বৃত্তির আওতায় দেশটির বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্স করতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে ভিসা এবং স্কলারশিপ লেটার হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজের আয়োজনে এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভিসা হস্তান্তর করেন রাশিয়ান হাউজের পরিচালক পাভেল দভইচেনকভ এবং ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাসের কনস্যুলার সেকশনের প্রধান ইলিয়া ভ্লাদিমিরোভিচ স্তুপাচেঙ্কো, ভাইস কনস্যুল আলেকজান্ডার তেরেখভ, রাশিয়ান হাউজের শিক্ষা বিভাগের প্রধান বজলুল হাসান সৈয়দ ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান প্রশান্ত কুমার বর্মণ।
রাশিয়ান হাউসের পরিচালক পাভেল এ ডভয়চেনকভ বলেন, ১৯৭২ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে অনেক বাংলাদেশি ছাত্র পূর্ণবৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নে যাত্রা শুরু করেন। তখন থেকে সোভিয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। বর্তমানেও তারা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত এবং দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
আয়োজনে পাভেল দভয়চেনকভ উচ্চশিক্ষার গন্তব্য হিসেবে রাশিয়াকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য বাংলাদেশি তরুণদের প্রশংসা ও অভিনন্দন জানান।
একইসঙ্গে তিনি তাদের সবার মঙ্গল ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে রাশিয়ায় উচ্চ শিক্ষার জন্য রাশিয়ান সরকারি বৃত্তির সংখ্যা ছিল ১১০টি। আশা করা হচ্ছে, আগামী শিক্ষাবর্ষ ২০২৪-২০২৫ থেকে ধীরে ধীরে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
এ আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন সোভিয়েত অ্যালুমনি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক (ডক্টর অফ হিস্ট্রি, পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অফ রাশিয়া) ড. তাইবুল হাসান খান, রাশিয়ান হাউসের রাশিয়ান ভাষা কোর্সের শিক্ষক মিসেস ইয়াসমিন সুলতানা, পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের উপসচিব ড. মোহাম্মদ আমজেদ হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ‘মৈত্রী ও সহযোগিতা’ চুক্তি হয়।
ওই চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে রাশিয়ায় পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন। রাশিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য শাখার সব বিষয়ে পড়া সম্ভব। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের রাশিয়ার যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের যেকোনো দেশে চাকরির সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি সারা বছর খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ পাবেন। দেশটিতে এ সংক্রান্ত একটি আইন ইতোমধ্যে পাস হয়েছে।
এরপর রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটির (পিএফইউআর) শিক্ষার্থীরা ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন।
ভিডিও কনফারেন্সে রাশিয়াস্থ বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ও বাংলাদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (পিএফইউআর) সদস্যরা অংশ নেন।
তারা রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান। তারা রাশিয়ায় অধ্যয়নের অভিজ্ঞতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ এবং রাশিয়ানদের আন্তরিক জীবনধারাও শেয়ার করেন।
সবশেষে সব শিক্ষার্থীদের হাতে ভিসাসহ যাবতীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৩
এইচএমএস/এএটি