জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষায় এগিয়ে থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়টি পিছিয়ে আছে আবাসন সুবিধায়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষকদের আবাসন সমস্যার বিষয়টিও প্রকট। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিতে কিছু সংখ্যক শিক্ষকের জায়গা হলেও সিংহভাগ শিক্ষককে আবাসন সুবিধা দিতে পারেনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। অধিকাংশ শিক্ষকই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাতায়াত করেন বাসে। ফলে যাতায়াতে ব্যয় হচ্ছে তাদের মূল্যবান সময়। পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সুবিধা পাবেন।
তথ্যসূত্র অনুযায়ী, ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অষ্টম জাতীয় সংসদের ১৮ তম অধিবেশনে “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন–২০০৫” উত্থাপিত হয়। ওই বছরেরই ২০ অক্টোবর সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে জগন্নাথ কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয় ১৮ বছরে পা দিলেও শিক্ষকদের আবাসিক সুবিধা দিতে এখন পর্যন্ত কোনো যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। সংশ্লিষ্টদের দাবি নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শেষ হলেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের শিক্ষকদের আবাসন সংকট আছে। প্রতিদিন আমাদের বাসে যাতায়াত করতে হয়। দূর থেকে আসা-যাওয়ার ফলে শিক্ষকরা ক্লান্ত হয়ে যায়। ক্লান্ত শরীর নিয়ে ক্লাস করা গবেষণা করা কঠিন হয়ে যায়। আমাদের পর্যাপ্ত পরিবহন সুবিধা ও নেই। অনেক সময় শিক্ষকরা দাঁড়িয়েও আসে। যদিও কিছু ব্যাচেলর শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরিতে থাকার সুযোগ পায় তবুও তা খুবই কম। আবাসন ব্যবস্থা আমাদের জন্য খুব জরুরি।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান অনাবাসিক। কেরানীগঞ্জে যে ক্যাম্পাস হচ্ছে ওখানে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকলে পড়াশোনা, গবেষণা করা, শিক্ষার্থীদের যে সময় দেওয়া যায়, আবাসন সুবিধা না থাকায় এটি হচ্ছে না। বাসে করে যাতায়াতে অনেক সময় নষ্ট হয়। অনেক সময় আধঘণ্টার রাস্তায় জ্যামের কারণে দেড় ঘণ্টা লাগে। যাতায়াতে শিক্ষকদের যে সময় নষ্ট হয় সেটি যদি শিক্ষকরা গবেষণায় কাজে লাগাতে পারতেন, সেটিই বেশি ভালো হতো।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের একাংশের সভাপতি মো. জাকির হোসেন এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, কেরানীগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ক্যাম্পাসটি তৈরি হচ্ছে তা কবে সম্পন্ন হবে তা আমরা এখনো পর্যন্ত জানি না। আটটা থেকে চারটা অফিস টাইম। এক শিফটে আমাদের বাস চলে। আগে সন্ধ্যার পর একটা সুবিধা ছিল, ওটা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো শিক্ষক যদি চান গবেষণা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের কারণে চারটার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে তাহলে তার জন্য এটি কঠিন হয়ে যায়। আমাদের অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস এক শিফটে চলে এটা কেন আমি জানি না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, সে প্রশ্নও রাখেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
এমজে