ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ জুলাই ২০২৪, ০১ মহররম ১৪৪৬

শিক্ষা

কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা: অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২৩
কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা: অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত

ঢাকা: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৩-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য শিগগিরই অধ্যাদেশটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

আগামী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একক আওতাভুক্ত করে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ইউজিসি গঠিত কমিটির সভায় বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সর্বসম্মতিক্রমে এ খসড়া চূড়ান্ত করা করা হয়।

কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) নামে পৃথক একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের আগ পর্যন্ত এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে বলে সভায় জানানো হয়। ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে যা–ই থাকুক না কেন, এ অধ্যাদেশ প্রাধান্য পাবে।

গত ১০ অক্টোবর ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের জন্য গঠিত কমিটির সভায় রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আচার্যের অভিপ্রায় অনুসারে ভর্তি পরীক্ষা কার্যকরভাবে নেওয়ার জন্য দ্রুত একটি অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করা হয়।  

ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নূরুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ম. তামিম এবং ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান।

অধ্যাদেশের খসড়ায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি কার্যক্রমে জটিলতা, দীর্ঘসূত্রিতা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপত্তাহীনতা ও দুর্ভোগ, অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় এবং সময়ক্ষেপণ পরিহারের লক্ষ্যে বিদ্যমান ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি প্রক্রিয়ার জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার এবং বিদ্যমান ব্যবস্থার সংস্কারপূর্বক সমন্বিত কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা প্রবর্তনে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায়ের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।  

এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, সংবিধি, বিধি, প্রবিধি, প্রণীত আইন বা আইনের ক্ষমতা সম্পন্ন অন্য কোনো দলিলে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়া যোগ্য বিবেচিত না হইলে কোনো ভর্তিচ্ছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য উপযুক্ত মর্মে বিবেচিত হইবে না। ’

ভর্তি কার্যক্রম বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ফলাফল প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এই ফলাফল, শিক্ষার্থীদের ইতোপূর্বে সম্পাদিত মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমান ও উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমান পরীক্ষার ফলাফল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শর্তাবলী অনুযায়ী মেধাক্রমের ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করিবে। ’

এছাড়া, ‘কোন বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে সীমিত পর্যায়ে শুধুমাত্র সঙ্গীত, চারুকলা, নৃত্যকলা, নাট্যকলা, স্থাপত্যবিদ্যা বা এ জাতীয় অতি বিশেষায়িত বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অ্যাপটিটিউড টেস্ট গ্রহণ করিতে পারিবে। ’

‘ভর্তি প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীবান্ধব এবং দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করিবার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ নীতিমালা অথবা নির্দেশিকা প্রণয়ন করিবে, যাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বাধ্যকর হইবে। ’

সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। তাঁর অভিপ্রায় বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন। অধ্যাদেশ জারি হলে এর বাইরে গিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কোনো সুযোগ থাকবে না।

প্রফেসর আলমগীর আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের হয়রানি ও দুর্দশা কমবে এবং ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ হবে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি স্বল্প সময়ের মধ্যে জারি করা হলে এইচএসসির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে প্রবেশে ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশের খসড়ার বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন। এছাড়া, কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান সভার শুরুতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২৩
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।