ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বুয়েটে ছাত্ররাজনীতিতে ‘জড়িতদের’ বুলিংয়ের অভিযোগ

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৪
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতিতে ‘জড়িতদের’ বুলিংয়ের অভিযোগ

ঢাকা: সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত একদল শিক্ষার্থী ক্রমাগত বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

শনিবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কেমিকেল অ্যান্ড ম্যাটারিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আশিক আলম, সাগর বিশ্বাস, অরিত্র ঘোষ ও ২১ ব্যাচের অর্ঘ দাস এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর স্বপ্নীল।

তারা দাবি করেছেন, মানববন্ধনে আরও প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রমাগত বুলিংয়ের শিকার হবেন, এই ভয়ে তারা অংশ নেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের বুলি করা হয়েছে দাবি করে সেগুলোর কিছু স্ক্রিনশটও দেখান শিক্ষার্থীরা।

সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ একদল নেতাকর্মী বুয়েটে ‘মহড়া’ দেন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমসহ (ইমতিয়াজ রাব্বি) একদল শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন।

এই ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বলে পরিচয় দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অফলাইনে ও অনলাইনে নানাভাবে র‍্যাগিং, বুলিংয়ের শিকার ও নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন মানবনন্ধনকারীরা।

লিখিত বক্তব্যে ২০ ব্যাচের আশিক আলম বলেন, বুয়েটর সংবিধানে ক্যাম্পাসে সকল ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের যে আইন আছে আমরা তাকে সম্মান করি। তবে এই সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে গোপনে হিজবুত তাহরির, ইসলামী ছাত্র শিবিরের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো কাজ করছে। আবরার ফাহাদের হত্যার ঘটনায় আমরাও দুঃখিত। তবে সে ঘটনার আবেগকে ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নামানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালে সুনামগঞ্জে বুয়েটের ৩৪ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হলে আমরা মৌলবাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করি। সে ঘটনায় আমাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয় এবং ৭০-৮০ জন মিলে দুজনকে ডেকে ‘কালচারাল র‌্যাগিং’ দেওয়া হয়। কারও পরিবার রাজনীতির সাথে যুক্ত হলে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ ও পরিবার নিয়ে অশালীন মন্তব্য করা হয়। তাদেরকে নিয়মিত র‍্যাগিং, বুলিং, হুমকি ও ভয় ভীতির মধ্যে জীবন কাটাতে হয়।

আশিক আরও বলেন, একবার আমরা বন্ধুবান্ধব ও সিনিয়র-জুনিয়র মিলে ক্যাফেটেরিয়ায় কাচ্চি রান্না করে খাই। এটিকে রাজনৈতিক তকমা দিয়ে আমাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আমাদেরকে সকল গ্রুপ ও ক্লাব থেকে বের করে দেওয়া হয়। শিক্ষা উপকরণ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ভালো খেলা সত্ত্বেও সব ধরনের খেলা থেকে বাদ দেওয়া হয়। আমাদেরকে র‍্যাগার, খুনি, মাদকাসক্তসহ আরও অপবাদ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিনে আমরা ইফতার বিতরণ করি, সেখানেও আমাদের একই অপবাদ দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা প্রদান করে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিতে বুয়েট ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান মানববন্ধনকারীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৪
এমজে

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।