ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

বৃহস্পতিবার সারা দেশে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে: শিক্ষামন্ত্রী 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
বৃহস্পতিবার সারা দেশে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে: শিক্ষামন্ত্রী 

ঢাকা: আদালতের নির্দেশনার প্রতি সম্মান জানিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (২ মে) সারা দেশে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধই থাকছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।  

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

তাপদাহের কারণে আগামী ২ মে পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার জন্য নির্দেশনা দেন আদালত। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ আদেশ দেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতকাল গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি যে উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ এবং রুলও জারি করা হয়েছে। সেই রুলের জবাব দেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো দাপ্তরিকভাবে অবগত হইনি। যেহেতু একজন আইনজীবীর বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে এসেছে, সেই আদেশে কী বলা হয়েছে সেটা অবগত নই। এটি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবস্থান হলো- ছুটি, কারিকুলাম, টেক্সটবুক, পরিচালনাগত নানান বিষয় একটা বিশেষয়িত কার্যক্রম। এই্ বিশেষায়িত কার্যক্রমের জন্য অনেক অংশীজন এখানে সংযুক্ত থাকেন। অনেক অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ছুটির বিষয়টাও এমনি যে আবহাওয়া অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা নির্ধারণ করি। ’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজধানী ঢাকার একটা পরিবেশ, আর ঢাকার বাইরে প্রান্তিক পর্যায়ে পরিবেশ ভিন্ন। সেখানকার শিক্ষক-অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের চ্যালেঞ্জগুলো রাজধানীর মতো নয়। শুষ্ক মৌসুমে দেখা যায়, অনেক জেলায় পাঠদান কার্যক্রম হয়ে থাকে। সেগুলো এখন বন্ধ থাকলে তাদের জন্য ক্ষতিকর এবং শিখনফল আরও বেড়ে যায়। এই অবস্থা এবং তাপমাত্রার কথা বিবেচনায় নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু জেলায় পাঠদান স্থগিত রাখা হয় এবং দৈনিক ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম।

‘সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি আমাদের যথাযথ সম্মান আছে। আমরা সেই সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আমাদের অভিমত প্রকাশ করতে পারি। সেটি হচ্ছে, সব জেলায় বিদ্যালয় খোলা থাকবে এমন সিদ্ধান্ত নেইনি। ’

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের মারফত শোনা যাচ্ছে যে, ইংরেজি মাধ্যম, ও লেভেল, এ লেভেল স্কুল খোলা থাকবে। ইংরেজি মাধ্যম, ও লেভেল, এ লেভেল স্কুলে প্রভাবশালী বা ধনশালী, সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিরা সন্তানদের পড়াশোনা করতে পাঠান। তাদের স্কুল খোলা থাকবে, আর প্রান্তিক পর্যায়ে আমাদের সন্তান যারা, যাদের বাবা-মা মাঠেঘাটে কাজ করে দেশের অর্থনীতি এবং সমাজকে চালিয়ে রেখেছেন, তাদের সন্তানরা পাঠদান কার্যক্রম করতে পারবে না- এটা তো দৃশ্যত বৈষম্যমূলক একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। সেটি আসলে দুঃখজনক। প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষের কথা মাথায় না রেখে শুধু শহরাঞ্চলের মানুষের কথা মাথায় রেখে আলোচনা এসেছে যে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হোক। কিন্তু আমরা সহনশীলতার জায়গা থেকে সেখানে বন্ধ করে দিতে বলেছি।  

তিনি বলেন, আমরা আদালতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এ বিষয়ে মন্তব্য করার মতো অবস্থান নেই। আমরা রায়ের আদেশ দেখিনি, তাই মন্তব্য করবো না। একটা কথা বলছি যে, নীরবতাটা সম্মতির লক্ষণ।

‘কোর্ট ক্যালেন্ডারে আমরা দেখলাম যে বৃহস্পতিবার আদালত বন্ধ। যেহেতু বৃহস্পতিবার আদালত বন্ধ আমাদের আপিলেরও সুযোগ নেই। এখানে মন্তব্য করাটাও কঠিন। যেহেতু আদালতের সিদ্ধান্ত আছে। আমরা সম্মানপ্রদর্শন পূর্বক সেই সিদ্ধান্তের বিষয়ে চাইলেও এই মুহূর্তে ব্যবস্থা নিতে পারছি না। ’

বৃহস্পতিবার তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কী হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদেশের কোনো কপি আমাদের হাতে নেই। অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার নজির যেটা, সেটা হচ্ছে সেই নির্দেশনা নির্বাহী বিভাগ (মন্ত্রণালয়) সম্মান প্রদর্শনপূর্বক মেনে চলে। নির্বাহী বিভাগ মেনে চলতে বাধ্য।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
এমআইএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।