ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ভিকারুননিসায় ভর্তি

‘বোন কোটা’ চেয়ে অন্যায় করিনি: অভিভাবক ফোরাম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১২
‘বোন কোটা’ চেয়ে অন্যায় করিনি: অভিভাবক ফোরাম

ঢাকা: ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তিতে বোনদের জন্য শতভাগ কোটা চেয়ে অন্যায় কিছু করেননি বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরাম। তবে শতভাগ কোটা চেয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে চাপ দেওয়া এবং কর্তৃপক্ষকে ভর্তির জন্য একটি তালিকা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে ফোরাম।



বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের পক্ষে এ দাবি করা হয়। এসময় ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির সঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ জড়িত বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

ফোরাম সভাপতি মোশারফ হোসেন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মজিদ সুজন, মহিলা সম্পাদক জেসমিন আকতার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে মোশারফ হোসেন বলেন, “ফোরামের নাম জড়িয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সত্য নয়। এটি কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুআরা বেগম এবং একটি স্বার্থানেষী মহলের অপপ্রচার। আমরা বোনদের জন্য শতভাগ কোটা চেয়েছি সত্য। এই দাবি নিয়ে ফোরামের প্রতিনিধিরা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে যাই। কিন্তু অধ্যক্ষ আমাদের কথা না শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। প্রতিনিধিদের অপমান করেন। ”

কোটা বাড়ানোর এখতিয়ার তো পরিচালনা পর্ষদের, তবে কেন অধ্যক্ষকে দায়ী করে বক্তব্য দিচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা পর্ষদের সভাপতি রাশেদ খান মেননের সঙ্গে কথা বলেছি। অন্য অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবাই রাজি। কিন্তু অধ্যক্ষসহ অভিভাবক প্রতিনিধি কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোবারক হোসেন, পর্ষদের শিক্ষক প্রতিনিধি শাহ আলম, নাসরিক আকতার এবং জিন্নাত আরা এর বিরুদ্ধে। এরা সবাই অধ্যক্ষের পক্ষে কাজ করছেন।

মোশারফ আরো বলেন, “শতভাগ কোটা আমরা দাবি করেছি। তবে ৫০ শতাংশ হলেও চলবে। ”

তিনি দাবি করেন, মঞ্জুআরা বেগম দুর্নীতি পরায়ন। তিনি এখানে ভর্তি বাণিজ্য করছেন। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বলা হচ্ছে লটারির মাধ্যমে ১ হাজার ৪৮৪ জন ছাত্রী ভর্তি করা হবে। কিন্তু প্রতিবার এমনটি বলে ভিন্ন কাজ করা হয়। গতবারও ১ হাজার ৪০০ আসন ছিলো। কিন্তু ভর্তি করা হয় ১ হাজার ৭৫০ জন। ৩৫০ জন কিভাবে ভর্তি হলো। এদের দিয়ে ভর্তি বাণিজ্য করেছেন অধ্যক্ষ। আর অতিরিক্ত ছাত্রী ভর্তি হওয়ায় আমাদের মেয়েরা ক্লাস রুমে বসার জায়গা পায় না।

এসময় তিনি আরো বলেন, “মঙ্গলবার ইংরেজি বিভাগের ভর্তির লটারি হয়েছে। এতে আসন ১৪০টি। অথচ ১২৯ জনের লটারি হয়েছে। বাকি ১১ জনের কি হলো। বলা হচ্ছে মন্ত্রী, সচিব, প্রতিবন্ধী কোটায় লটারি হবে না। কিন্তু প্রতি বছর ২ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা থাকলেও এই কলেজে কোনো প্রতিবন্ধী দেখা যায়নি। ”

তিনি বলেন, “স্কুলের চারটি শাখাতেই এভাবে অলিখিক কিছু কোটা তিনি রেখে দেন। এটি কি দুর্নীতি নয়?”

স্কুলের পড়াশোনার মান পড়ে যাচ্ছে উল্লেখ্য করে বলা হয়, আগে স্কুলটি প্রথম স্থান অর্জন করলেও এখন তা আর পাড়ছে না। কারণ শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্যে সক্রিয়। তারা শ্রেণীকক্ষে পাঠদানে আগ্রীহ নন। অথচ এনিয়ে আমরা কথা বলতে পারি না।

মোশারফের দাবি, সরকারি নির্দেশ থাকার পরও অতিরিক্ত ভর্তি ফির টাকা অধ্যক্ষ ফেরত দেননি। অথচ অভিভাবকদের কাছ থেকে ৬৯ লাখ টাকা নিয়েছেন এভাবে।

সংবাদ সম্মেলনে সব অভিযোগ শুধু অধ্যক্ষকে নিয়ে কেন। পর্ষদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “পর্ষদের সবাই এর সঙ্গে জড়িত নন। ”

ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন নয় বলে দাবি করেছেন তারা। তবে এক বছর পরে ভর্তির অনিয়মের তথ্য নিয়ে কেন সংবাদ সম্মেলন? এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কেউ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১২
এসএআর/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।