ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

স্কুল উচ্ছেদ শিশুদের ওপর অত্যাচার

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৪
স্কুল উচ্ছেদ শিশুদের ওপর অত্যাচার ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি): স্কুল-কলেজ দখল করা সংবিধান এবং স্পষ্টত মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছেন কলাম লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ।

তিনি বলেন, একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ও যদি স্থানান্তরিত করা হয় এবং সেখানে পরবর্তী স্থান ঠিক না হওয়া পর্যন্ত স্থানান্তর করা হয় না।

অথচ সরকারি বিদ্যালয় হওয়ার পরেও উচ্ছেদ হতে হচ্ছে। এটা শিশুদের ওপর অত্যাচার।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দখল হয়ে যাওয়া রাজধানীর মিরপুরের চম্পা-পারুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উদ্ধারের দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সমাবেশে চম্পা-পারুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিশু শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সমাজের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় শিশুদের হাতে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড শোভা পায়। সেখানে তারা নিজ স্কুল ফেরত পাওয়াসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকের সুসম্পর্ক, প্রশিক্ষিত শিক্ষক এবং মুক্ত পরিবেশে বেড়ে ওঠার দাবি জানায়।

‘আমার অধিকার ফাউন্ডেশন’, ‘নাগরিক সংহতি’ এবং ‘চম্পা-পারুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে।

রাজধানীর চম্পা-পারুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সব স্কুল দখলদারিত্বের পেছনে ‘সরকারি আনুগত্য’ রয়েছে বলে অভিযোগ করে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সরকারি আনুকূল্য ছাড়া কেউ কোনোদিন স্কুল দখল করতে পারে না। শুধু রাজধানীতেই ২৮টি এবং সারাদেশে একশ ৫০টির মতো সরকারি প্র্রাথমিক বিদ্যালয় দখল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে এখন দখলদারিত্বের সংস্কৃতি চলছে। মাঠ-ঘাট নদীর পর ভূমিদস্যূদের নজর এখন স্কুলে এসে ঠেকেছে। শুধু বেসরকারিই নয়, সরকারি বিদ্যালয় থেকে ছাত্রছাত্রীদের উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রও চলছে।

আবুল মকসুদ বলেন, স্কুল-কলেজ দখল করা সংবিধানের লঙ্ঘন এবং স্পষ্টত মানবাধিকারের লঙ্ঘন। একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ও যদি স্থানান্তরিত করা হয়, সেখানে পরবর্তী স্থান ঠিক না হওয়া পর্যন্ত স্থানান্তর করা হয় না। অথচ সরকারি বিদ্যালয় হওয়ার পরেও উচ্ছেদ হতে হচ্ছে। এটা শিশুদের ওপর অত্যাচার।

এখনই প্রতিহত না করা গেলে সারা দেশেই এই ভূমিদস্যুরা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সাংবাদিক আবু সাঈদ খান শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনি কী ঘুমাচ্ছেন! নাকি ঘুমের ওষুধ খেয়ে টালমাটাল হয়ে আছেন! আপনি আলোর পক্ষে নাকি অন্ধকারের পক্ষে! যদি আলোর পক্ষে হয়ে থাকেন, তাহলে কোমলমতি শিশুদের অন্ধকারে রেখেছেন কেন?

সাবেক ছাত্রনেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকারি স্কুল-কলেজ দখল করার জন্য ভূমিদস্যুরা সরকারের আইনকেই ব্যবহার করছে। শিক্ষা এখন পণ্যে পরিণত হয়েছে। গরিবের স্কুলই কেবল দখল হয়, বড়লোকের নয়।

অবস্থান কর্মসূচতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ভাস্কর রাসা, রাকসুর সাবেক ভিপি রাজিব আহসান মুন্না, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, সবেক ফুটবলার শেখ মুহাম্মাদ আসলামসহ চম্পা-পারুল স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।