ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

পিছিয়ে ভিকারুন্নিসা, রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৫
পিছিয়ে ভিকারুন্নিসা, রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এসএসসি’র ফলাফলে পিছিয়ে পড়েছে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর এক ধাপ পিছিয়ে তাদের অবস্থান চতুর্থ।

এজন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা দায়ী করছেন পরীক্ষার সময়ে চলা রাজনৈতিক সহিংসতা-অস্থিরতাকে।
 
প্রত্যেকেই বলছেন, পরীক্ষা চলাকালে হরতাল ও অবরোধের মতো রাজনৈতিক পরিস্থিতি সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
 
প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুফিয়া খাতুন বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার পর জানে, পরীক্ষা হবে অন্য বিষয়ে। মনের ভয়কে জয় করে তারা পরীক্ষা দিয়েছে। তারপরও তারা প্রমাণ করেছে নিজেদের। সবাইকে সাধুবাদ দিতেই হয়।
 
সুফিয়া জানান, ১৫০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫০১ জন পাস করেছে। ২জন পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না নিয়ে যাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। পাশের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৯০ জন।
 
তিনি জানান, জিপিএ-৫ পেয়েছে বিজ্ঞান বিভাগে ১২৫৭, মানবিকে ৩, ব্যবসা শিক্ষায় ৩০ জন।
 
প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় সূত্র জানান, মানবিক বিভাগে ২০ জন ছাত্রীর মধ্যে একজন অকৃতকার্য হয়েছে। ব্যবসা শিক্ষায়ও একজন অকৃতকার্য হয়েছে।
 
তবে ফলাফলে সেভাবে অখুশি নন সুফিয়া খাতুন। তিনি বলেন, প্রথমে শুনেছি তৃতীয় হয়েছি, পরে শুনলাম ৪র্থ। একটু মন খারাপ হলেও সেভাবে বিচলিত নই।
 
তিনি বলেন, প্রকৃত মেধা বিচারের সুযোগ আসবে সামনে। প্রমাণ মিলবে উচ্চতর শিক্ষায় ভর্তিতে। সেখানে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই থাকবে এগিয়ে।
 
প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুফিয়া বলেন, উচ্চতর শিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে যারা সুযোগ পেয়েছে, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ আমাদের শিক্ষার্থী। তাই স্কুলের পজিশন কততে গেল, তার চেয়ে বেশি জরুরি হল- শিক্ষার্থীরা কতটা যোগ্য হয়ে গড়ে উঠলো।
 
পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যারা শীর্ষে রয়েছে, তারা মানবিক বিভাগ রাখেন না। কিন্তু মানুষের চাহিদায় আমরা বিভাগ চালু রেখেছি। নৈতিক শিক্ষা, সমাজ, অর্থনীতি ও গৃহস্থালী শিক্ষা জানার প্রয়োজন রয়েছে। তাই সরকারের কাছে আবেদন থাকবে, মানবিক বিভাগটি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে চালু রাখতে।
 
‘এছাড়া আমরাতো প্রথম শ্রেণি থেকে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলি। অন্যরা বড় শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়। সেটারও একটা সুফল তারা পায়’- বলেন তিনি।
 
দুপুর দেড়টার দিকে পরীক্ষার ফলাফল জানতে শুরু করে ভিকারুন্নিসার শিক্ষার্থীরা। যারা ভালো করেছেন, তারা উচ্ছ্বসিত, সেলফির বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু যারা মনের মতো ফল পাননি, তারা কেঁদে বুক ভাসাচ্ছিলেন।
 
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া সাজিদুন্নাহার তামান্না। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পরীক্ষার সময়টিতে খুব কষ্টে ছিলাম। ফলাফল ভালো হয়েছে- এখন কষ্ট ভুলে গেছি।
 
জিপিএ-৫ পেয়ে খুশিতে কাঁদছিলেন ফারিবা রহমান। বিজ্ঞান বিভাগের এ শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধ, খুব কষ্ট হয়েছিল। এখন আনন্দ লাগছে।
 
তার মা সুলতানা পারভিন বলেন, শুধু আল্লাহকে ডেকেছি। রাজায় রাজায় মারামারি, আমার বাচ্চার কেন জীবন নষ্ট হবে? তাদের হরতাল-অবরোধে আমার বাচ্চা নিয়ে খুব পেরেশানিতে ছিলাম। এখন সবাইকে মাফ করে দিলাম। আমার মেয়ে খুশি, আমিও খুশি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৫
এসকেএস/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।