ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

মেঘ দেখলেই ছুটি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৫
মেঘ দেখলেই ছুটি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাঙামাটি: বিদ্যালয়ের সামনে যেতেই দেখি বিদ্যালয়ের কক্ষে তালাবদ্ধ। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্বরে আওয়াজ আসছে বেশ জোরে জোরে।

সামনে থেকে পেছনে যেতেই দেখা যায় একটি গাছের তলায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক। পাশে অস্থায়ী টিন শেডের নিচে আরো একটি ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।

এভাবেই খোলা আকাশের নিচে চলছে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার ২নম্বর গাইন্দ্যা ইউনিয়নের হাজি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি পুরাতন ভবন থাকলেও ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেওয়ায় দুই বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। তারপর প্রায় দুই বছর কেটে গেলেও এখনো খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয়।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৬৭ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পিডিপি-২ এর অধীনে ২০০১ সালে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ইতোমধ্যে ভবনের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিলে ২০১৩ সালে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাদেকুর রহমান ও উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যালয়টিতে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করেন।

ভবনের করুণ দশা দেখে শ্রেণিকক্ষে তালা মেরে ভেতরে পাঠদান আপাতত বন্ধ করে দেন। তারপর প্রায় দুই বছর পার হয়ে গেলেও তালাবদ্ধ কক্ষ আর খুলতে হয়নি। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের পেছনে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, বিদ্যালয়টিতে ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানে ৭০ শিক্ষার্থী ও  তিন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছে। আকাশে যেদিন রোদ দেখি, সেদিন মাঠে ক্লাস করি, আর যেদিন আকাশে সামান্য মেঘ দেখি সেদিন ছুটি দিতে বাধ্য হই! তা-না হলে বৃষ্টি আসতে না আসতেই ছেলেমেয়েরা বই খাতা নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে যাওয়ার পথেই অনেক সময় তাদেরকে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মানস মুকুল চাকমা জানান, দীর্ঘদিন বিদ্যালয়টির যে করুণ দশা, তা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। আমি বিদ্যালয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত। এছাড়া সামনে বর্ষা মৌসুম, ঠিকমত ক্লাস করতে না পারলে কিভাবে ভাল রেজাল্ট করবে। তাই বিদ্যালয়টির এ অবস্থায় জেলা শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষা অধিদপ্তরে বেশ কয়েকবার লিখিতভাবে জানানো হলেও ক্লাসরুম নির্মাণের কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা বলেন, বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও এলাকাবাসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা এডিবি থেকে গত ১৪/১৫ অর্থবছরে বিদ্যালয়টির করুণ দশা দেখে তাৎক্ষণিকভাবে চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি বেড়ার ঘর নির্মাণের জন্য এক লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রকল্পটির কাজ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৫
এসএইচ/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।