ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

গৌরবের ১০ম বর্ষে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

খালেদ হাফিজ উল্লাহ্‌, নোবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৫
গৌরবের ১০ম বর্ষে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নোবিপ্রবি: উপকূলীয় অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে সোনাপুর-সুবর্ণচর সড়কের পাশে নোয়াখালী মৌজায় ১০১ একর জায়গায় ওপর প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়।



২০০১ সালের ১৫ জুলাই জাতীয় সংসদে পাশ হয় ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ২২ জুন একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৫ সালের ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়টি ১০ বছর পূর্ণ করলো। বাল্যকাল পেরিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয় এখন টগবগে তরুণ।

১৩ জন শিক্ষক, ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও চারটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির যাত্রা। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১৪টি বিভাগে ৩ হাজার ৫০০জন  শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত আছেন ১০৫ জন শিক্ষক এবং ২০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।

বিভাগগুলো হলো- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশল, মৎস্য ও সামুদ্রিক বিজ্ঞান, ফার্মেসি, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল, অণুজীব বিজ্ঞান, ইংরেজি, খাদ্য প্রযুক্তি ও পুষ্টি বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ শিক্ষা, ব্যবসায় প্রশাসন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।

বিভাগগুলোতে স্নাতক প্রোগ্রামে প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ৮৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতটি বিভাগে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম
চালু আছে। তবে, এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম প্রতিষ্ঠিত চারটি বিভাগে (কম্পিউটার বিজ্ঞান ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশল, মৎস্য ও সামুদ্রিক বিজ্ঞান, ফার্মেসি, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল) স্নাতকোত্তর কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলো বিভাগে ইংরেজি মাধ্যমে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। তবে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি বিভাগ এখনো একটি অনুষদের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও কোনো প্রকৌশল অনুষদ নেই।

সময় বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারী বাড়লেও অবকাঠামোগত তেমন উন্নতি হয়নি। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রয়েছে দুটি আবাসিক হল এবং দুটি একাডেমিক ভবন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ফলে প্রায় ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সুযোগ বঞ্চিত এবং অধিকাংশ বিভাগেই রয়েছে শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব সংকট।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের  অনান্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তা ডরমেটরি, কর্মচারী ডরমেটরি, উপাচার্যের বাসভবন, প্রধান ফটক, টিএসসি, গেস্ট হাউস, কেন্দ্রীয় মসজিদ ও পার্ক। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো দুটি ছাত্র হল ও একটি ছাত্রী হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে।

শিক্ষার্থীর জানায়, ওয়াই-ফাই সংযোগ না থাকা, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে বইয়ের সঙ্কট, হল ও ক্যান্টিনের খাবারে ভর্তূকি না থাকা, ক্যাম্পাসে মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতাকে তারা প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখছেন।

এসব সমস্যার থাকা সত্ত্বেও, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বের সাথে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও আধুনিক জ্ঞানচর্চা বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে এখানে নিয়মিত পাঠদান করা হচ্ছে। এছাড়া, গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবিরাম চেষ্টা করে চলছেন।
 
বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের মানুষের  আস্থার জায়গায় পরিণত হয়েছে। আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের সব অঞ্চলের মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার সূতিকাগারে পরিণত হবে এমনটাই আশা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সবার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, আমি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ডিজিটাল ক্যাম্পাসে রুপান্তরিত করতে চাই।   এখানে যেসব সমস্যা রয়েছে তা আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের অনেক সঙ্কট রয়েছে। তবে সাধ্যের আলোকে সমাধানের সর্বোচচ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৫     
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।