ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

শিক্ষক ১৩, শিক্ষার্থী ৬, তবু শতভাগ ফেল

মো. ইমরান হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৫
শিক্ষক ১৩, শিক্ষার্থী ৬, তবু শতভাগ ফেল ছবি: বাংলানিউজেটোয়েন্টিফোর.কম

নড়াইল: কলেজে শিক্ষক রয়েছেন মোট ১৩ জন। আর  ছাত্র-ছাত্রী তার অর্ধেকেরও কম, মাত্র ৬ জন।



তবে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ওই ৬ শিক্ষার্থীদের সবাই অকৃতকার্য হয়েছেন।

এই চিত্র নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত মুলিয়া পাবলিক কলেজের।
 
কলেজ সূত্র জানায়, চলতি বছর এই কলেজের মানবিক বিভাগের ৬ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ  নেয়। এদের মধ্যে ৪ জন ছাত্র ও ২ জন ছাত্রী। যাদের ৪ জনই আবার ছিলেন অনিয়মিত শিক্ষার্থী।

গত ৯ আগস্টে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় এ কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থীই কৃতকার্য হতে পারেনি।

কলেজটির এ বাজে ফলাফলের কারণ হিসেবে স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ২০০৫ সালে সদরের মুলিয়া ইউনিয়নে গ্রামবাসীর উদ্যোগে কলেজটি গড়ে তোলা হয়। সে সময় এলাকার  মুলিয়া, কলোড়া, তুলারামপুরসহ আশপাশের অন্তত ১৫টি গ্রামের শিক্ষার্থীরা এ কলেজে পড়াশোনা করতেন।

প্রথমদিকে কলেজের বেশ সুনাম ছিল। সে সময় এ‍ কলেজ থেকে প্রতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হতেন। ছাত্রছাত্রী ছিল প্রায় ২ শতাধিক।

কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১০ বছরেও কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তাই একসময় কলেজের শিক্ষকরা নিয়মিত কলেজে আসা বন্ধ করে দেন। এরপর থেকেই শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে।

বর্তমানে  শিক্ষার্থী কমে দাঁড়িয়েছে ৬ জনে। আর শিক্ষক অবশিষ্ট রয়েছেন ১৩ জন।

বুধবার (১২ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের প্রতিটি কক্ষই তালাবদ্ধ। নেই কোনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা কর্মকর্তা-কর্মচারী। লাইব্রেরির খোলা জানালা দিয়ে ভিতরে দেখা যায় শিক্ষা সরঞ্জামগুলো অগোছালোভাবে পড়ে আছে। এখানে-সেখানে মাকড়সা বাসা বেঁধেছে।

কলেজের শ্রেণিকক্ষের অবস্থাও নাজুক। অনেক কক্ষেই নেই দরজা-জানালা। ভিতরে খড়ের গাদা দেখেই বোঝা যায় গরু-ছাগলের অবাধ আনাগোনা প্রতিনিয়ত।

কলেজের পাশের বাসিন্দা বৃদ্ধ হরিপদ সরকার জানান, একটি লোক ২ মাস আগে তার কাছে ২টি বই রেখে গেছেন অধ্যক্ষকে দিতে। কিন্তু ২ মাসের মধ্যে অধ্যক্ষ না আসায় বইগুলো তার কাছেই রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে মুলিয়া পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ খান নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ১০ বছর পরেও এমপিভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা নিয়মিত কলেজে আসেন না। তাই কলেজের এ বেহাল দশা।

কলেজের এই দৈন্য-দশার ব্যাপারে নড়াইল সদর উপজেলা মাধ্যামিক শিক্ষা অফিসার মো. ফজলুল হক বলেন,  আমি এখানে নতুন এসেছি। কলেজটি পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, সঠিক দিক-নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কলেজটির দ্রুত উন্নতি হবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।