ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বাকৃবির ৯৬ কর্মচারীর নিয়োগ বাতিল

তদন্ত কমিটির সুপারিশে অনিয়মের অভিযোগ

বাকৃবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
তদন্ত কমিটির সুপারিশে অনিয়মের অভিযোগ

বাকৃবি (ময়মনসিংহ): অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগে ৯৬ কর্মচারীর নিয়োগ বাতিলে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া কর্মচারীরা।  

তবে, নিয়ম বহির্ভূতভাবে যেসব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং আবেদন না করে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


 
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শাখা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. রফিকুল হকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিয়ম অমান্য করে ২৮৭ জনের জায়গায় ৩১৩ জনকে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেয়। নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় চলতি বছরের ৩ মার্চ ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।   
    
৭ এপ্রিল নিয়োগে অনিয়ম, অর্থ-বাণিজ্য ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে শিক্ষকদের চাপে পদত্যাগ করেন তৎকালীন ভিসি। ২৪ এপ্রিল নতুন ভিসি হিসেবে যোগদান করেন অধ্যাপক ড. আলী আকবর। যোগদানের পরেই তিনি নিয়োগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ তদন্ত কমিটির সুপারিশে রোববার ৯৬ জন কর্মচারীর স্থায়ী নিয়োগ বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।   
 
কিন্তু নিয়োগ বাতিলের ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটির স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া কর্মচারীর। তাদের অভিযোগ, কোনো সমস্যা হবে না আশ্বাস দিয়ে গত পাঁচ মাস তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের বৈধ নিয়োগ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ বাতিল করল।
 
নিরাপত্তাকর্মীর পদ থেকে বাতিল হওয়া এক কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত সব নিয়ম মেনে নিয়োগ পেয়েছিলাম। এখন আমার চাকরি নাই। গত পাঁচ মাস রাত জেগে বিশ্ববিদ্যালয় পাহারা দিয়েছি। অথচ প্রশাসন বলছে আর আসার দরকার নেই। কিন্তু অনিয়ম করে অযোগ্য অনেকের নিয়োগ বাতিল করেনি প্রশাসন।  
 
বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর ধরে মাস্টার রোলে চাকরিরত এক কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, যে পদে বিজ্ঞপ্তি হয়েছে সেই পদেই চাকরি পেয়েছিলাম। হলে এতোদিন বিনা বেতনে কাজও করলাম। এখন বলছে আমাকে আর দরকার নাই। আমার শ্রমের কোনো মূল্য দিলো না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
 
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কাসেম কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অথবা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
 
এদিকে, সোমবার সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী বয়ড়া পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। পরে, তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রেজিস্ট্রার ছাইফুল ইসলাম ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন।  
 
বৈঠক শেষে চেয়ারম্যান জানান, বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য তদন্ত কমিটিকে ডেকে পাঠাবে। তবে, চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ছাইফুল ইসলাম বলেন, সম্পূর্ণ নিয়ম অনুসারে নিয়োগের পূর্ণ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। যারা বাদ পড়েছে তাদের নিয়োগে অনিয়ম ছিল। পাঁচ মাস বিনা বেতনে চাকরির বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের অনুমোদন না থাকায় প্রশাসনের কিছু করার নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
এমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।