ঢাকা: এক ছাত্রীকে ‘হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি পাওয়া সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশারেফ হোসেনসহ (রাজীব মীর) তিন শিক্ষককে ডেকেছে এ ব্যাপারে গঠিত তদন্ত কমিটি।
অন্য দুই শিক্ষক হলেন প্রভাষক বর্ণনা ভৌমিক ও প্রভাষক প্রিয়াঙ্কা স্বর্ণকার।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল চারটায় অব্যাহতি পাওয়া তিন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষকে প্রধান করে সব অনুষদের ডিন ও রেজিস্ট্রারকে নিয়ে গঠিত হয়েছে এ তদন্ত কমিটি।
এক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১১ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশারেফ হোসেন, প্রভাষক বর্ণনা ভৌমিক ও প্রভাষক প্রিয়াঙ্কা স্বর্ণকারকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তারা বলছেন, মীর মোশারেফ হোসেনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এ কথোপকথনের রেকর্ডও আছে। আর ওই কথোপকথনে দুই নারী শিক্ষকের নাম থাকায় তাদেরকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তবে ওই তিন শিক্ষক বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি একটি ষড়যন্ত্র। সাতদিনের মধ্যে কারণ জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তারা চিঠিও দিয়েছেন। বেধে দেওয়া সাতদিন শেষ হওয়ায় কথা বলার জন্য তদন্ত কমিটি আজ তাদেরকে ডেকে পাঠিয়েছে।
মীর মোশারেফ হোসেন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগের একাডেমিক কমিটির অনুমোদন ও বাজেট ছাড়াই নবীনবরণ ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ তাই কিছু শিক্ষার্থীকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হতে অনুরোধ জানাই৷ তখন ওই শিক্ষার্থীরা জানান, অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হলে বিভাগের চেয়ারম্যান পার্সেন্টেজ কেটে দেবেন। তখন আমি বলেছি, পার্সেন্টেজ কে কাটেন, সেটা আমরা দেখবো। এটা হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে কেন? হুমকি তো বিভাগের চেয়ারম্যান সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীকে দিয়েছেন’।
উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগের কয়েকজন ছাত্রী সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশারেফ হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, তার কথা না শুনলে পরীক্ষায় নম্বর কমিয়ে দেবেন। অন্য দুই নারী শিক্ষকও তাদেরকে নম্বর দেবেন না।
তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থ ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে স্নাতকোত্তরের সকল কার্যক্রম থেকে ওই তিন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এটাকে শাস্তি বলার সুযোগ নেই। তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত শেষে দোষ প্রমাণিত হলে শাস্তির বিষয়টি আসবে। এর আগে তারা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটি একটি অডিওবার্তা যাচাই-বাছাইয়ে ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে- বলেন মীজানুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৬
এজেড/এএসআর