ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ হচ্ছে জাবির সাইবার সেন্টার!

নুর আলম হিমেল, জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ হচ্ছে জাবির সাইবার সেন্টার!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরের সাইবার সেন্টারটি। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 

জানা যায়, গত ১৬ আগস্ট ইন্টারনেট ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের (আইএমসি) অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মো. গোলাম মোয়াজ্জাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বরে সাইবার সেন্টারটি স্থাপন করা হয়েছে। ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সাইবার সেন্টারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব না থাকায় তথ্য প্রযুক্তি ও কম্পিউটার কোর্স চালিয়ে যাওয়া উক্ত বিভাগগুলোর জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ লক্ষ্যে শুধুমাত্র কম্পিউটার ল্যাব না থাকা বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার বিষয়ক তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক ক্লাস চালিয়ে যেতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আপাতত সাইবার সেন্টারটিকে ‘কমন কম্পিউটার ল্যাব’ হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উক্ত সাইবার সেন্টারটি কম্পিউটার ল্যাব হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করতে সেন্টারটি আগামী ২০ আগস্ট হতে সাময়িক বন্ধ থাকবে।  

এ ঘোষণায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন। তারা অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে কোনো সাইবার সেন্টার নেই। এমনকি ডেইরি ও প্রান্তিক গেটে যে ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যবস্থা ছিলো তাও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন চাকরির খবর, বিভিন্ন সারকুলার, চাকরির জন্য আবেদন কোথা থেকে করবো বুঝতে পারছি না।  

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুনবী বলেন, নানা কাজে আমাদের সাইবার সেন্টারটিতে আসতে হয়। এখন যদি তা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ছোট একটি কাজের জন্য সাভার শহরে যাওয়া লাগবে। তাছাড়া সেখানে প্রতি ঘণ্টা ৪০ টাকা করে লাগে, যা আমরা এখানে মাত্র দশটায় করতে পারি।  

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শিরিন সুলতানা বলেন, সাইবার সেন্টারটি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের খুব বিপাকে পড়তে হবে। আশেপাশে কোনো সাইবার সেন্টার নেই যেখান থেকে তড়িৎ গতিতে প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারবো।  

এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জুবায়ের টিপু বলেন, যাদের ল্যাপটপ বা পিসি কেনার সামর্থ নেই তারা কম টাকায় এই সাইবার সেন্টারে প্রয়োজনীয় কাজগুলো করে থাকেন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে হলে হলে যে ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে তা অধিকাংশ অকেজো হয়ে থাকে বা গতি খুবই কম থাকে। যা দিয়ে কোনো কাজ করা সম্ভব হয় না। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই সাইবার সেন্টারটি ব্যবহার করে থাকেন।  

ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের সভাপতি দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল বলেন, আধুনিক যুগ যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে কিছু খোঁড়া অজুহাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এভাবে নানা বিষয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। অল্পমূল্যে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট ব্যবহারের যে সুযোগটি পেতেন তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বন্ধ করে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের উপর যে কোনো বিষয় চাপিয়ে দেওয়ার যে অভ্যাস- এটি তারই বহিঃপ্রকাশ।  

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সুস্মিতা মরিয়ম বলেন, কমন ল্যাব যদি করতে চাই তাহলে অন্য জায়গায় করবে। বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীর জন্য এটি থাকা অতি জরুরি। এই সাইবার সেন্টারটিতে বসে সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩০ জন ক্লাস করতে পারবে। এতে কি সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাবেন যে, যার কারণে এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বন্ধ করা হচ্ছে! 

ইন্টারনেট ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের (আইএমসি) অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মো. গোলাম মোয়াজ্জামকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।  

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সাইবার সেন্টারটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে আসায় ইন্টারনেট ম্যানেজমেন্ট সেন্টার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়লে তা আবার চালু করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।