জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: তিন বছর পর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন দেওয়ার কথা থাকলে গত ১৫ বছরে একবারও নির্বাচন দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এমনকি বিভিন্ন সময় সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তোলা দাবিও আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
মেয়াদোত্তীর্ণ ২৫ জন রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট সিনেট সদস্য প্রতি বছর অধিবেশন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।
সব শেষ ১৯৯৮ সালে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হয় ২০০১ সালের পহেলা জুন। ওই নির্বাচনের আগে তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিলো, পরবর্তীতে কয়েকবার রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েটদের তালিকা হালনাগাদ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রেজিস্ট্রার অফিস সূত্র জানায়, ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ৯৩ জন সদস্য নিয়ে সিনেট গঠন করা হয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট লেভেলে ২৫ জন নির্বাচিত হন।
গত জুন মাসে সিনেট অধিবেশনে এ বিষয় নিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েটরাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পদে থাকতে চান না- বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে জানান।
এর প্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার ঘোষণা দিলেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কোনো আলামত দেখা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে জাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও মাউশির বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (বিসিএস) কাজী জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে না। ফলে স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে। আমি মনে করি, নির্বাচন না দেওয়ার অর্থ হলো ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অপচেষ্টা- যা কখনো কাম্য নয়।
বর্তমান প্রশাসনের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিৎ, মন্তব্য করেন জাকির হোসেন।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শামছুল আলম সেলিম বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ১৫ বছর রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন হয় না, তখন বুঝতে হবে গণতান্ত্রিক চর্চা ব্যাহত হচ্ছে। গণতান্ত্রিক চর্চা ফিরিয়ে আনতে নির্বাচন দেওয়া উচিৎ।
বামপন্থী শিক্ষক এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন জানান, আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরো তফসিল ঘোষণা করা না হলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মতিন কেবল রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট নয়, জাকসু নির্বাচনেরও দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে একাধিবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৬
এটি