ঢাকা: কওমি মাদরাসা শিক্ষার সনদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আলেম-ওলামাদের নিয়ে কমিটি গঠনের দুই সপ্তাহের মাথায় চার বছর আগে গঠিত ‘বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কমিশন’র মেয়াদ আবারও বৃদ্ধি করেছে সরকার।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির আহমেদ শফিকে চেয়ারম্যান এবং ইকরা বাংলাদেশের পরিচালক ও শোলাকিয়া ঈদগা মাঠের ইমামকে কো-চেয়ারম্যান করে গঠিত কমিশনের মেয়াদ আগামী বছরের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইনের স্বাক্ষরে রোববার (০৯ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কওমি মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, শিক্ষাদানের বিষয় এবং কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল ১৭ সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, কমিশন তার কার্যক্রম শেষে প্রতিবেদন হিসেবে কওমি মাদরাসা শিক্ষা নীতির খসড়া ২০১৩ সালের ১৩ এপ্রিল দাখিল করে। কমিশনের দাখিলকৃত ‘কওমি মাদরাসা শিক্ষা নীতি-২০১২ (খসড়া)’ প্রতিবেদনটি বর্তমান সময়ের আলোকে অধিকতর উপযোগীকরণের লক্ষ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক চূড়ান্ত সুপারিশ/মতামত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দাখিলের জন্য কমিশনের মেয়াদ ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো।
কমিশনের কার্যপরিধি ও অন্যান্য শর্তাবলী বহাল থাকবে বলেও আদেশে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষাসচিব স্বাক্ষরিত আদেশে কওমি মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়া পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রদানের জন্য আলেম-ওলামাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইকরা বাংলাদেশের পরিচালক ও শোলাকিয়া ঈদগা মাঠের খতিব মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের কমিটিতে দেশের খ্যাতনামা আলেম, মাদ্রাসার প্রধান এবং ইসলামিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের রাখা হয়েছিল।
১৫ কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষাসচিবের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল কমিটিকে।
গত ৪ অক্টোবর ওই কমিটি প্রথম সভা করে কওমি মাদরাসার ইতিহাস, ঐতিহ্য, স্বাতন্ত্র্যতা এবং স্বকীয়তা বজায় রেখে সুপারিশমালা প্রণয়নের একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
কিন্তু হঠাৎ করে কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধির ফলে পর্যালোচনা কমিটির অবস্থান কী হবে- তা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলানিউজের কাছে দাবি করে বলেন, ওই কমিশনের মেয়াদ চলতি মাসে শেষ হবে। আমরা চাই ওই কমিশন জীবিত থাকুক, কাজ করুক।
পর্যালোচনা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ওই কমিটির সদস্যরাই তো কমিশনে ছিলেন। এখন কমিশনই জীবিত হলো, তারা কমিশনে কাজ করবে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমিন কমিশনের সদস্য সচিব। তিনি পর্যালোচনা কমিটিরও সদস্য সচিব ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০১৬
এমআইএইচ/আরএইচএস