ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

তীব্র সেশনজটে জবির ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
তীব্র সেশনজটে জবির ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা না হওয়া ও বিভাগের প্রতি শিক্ষকদের চরম উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফার্মেসি বিভাগে তীব্র সেশনজটের সৃষ্টি হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের প্রায় দিগুণ সময়েও শিক্ষাজীবন শেষ না করতে পারায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শুরুর ৪ বছর পর অর্থাৎ ২০০৯-২০১০ সেশন থেকে যাত্রা শুরু হয় ফার্মেসি বিভাগের।

চাকরির বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে প্রথম সারিতে থাকা শিক্ষার্থীরাই ভর্তি হন বিভাগটিতে। প্রতি ব্যাচে ২৭ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় যা অন্যান্য যেকোনো বিভাগের তুলনায় কম। তারপরেও কেন এ নাগামহীন সেশনজট? এর উত্তর নেই কারো কাছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ল্যাবের উন্নয়ন ফি ছাড়াও হেকেপ থেকে ল্যাবের উন্নয়ন প্রকল্প আসলেও উন্নয়নের মুখ দেখেনি বিভাগের ল্যাবটি। রি-এজেন্টের অভাবে সুষ্ঠুভাবে ল্যাব এক্সপিরিমেন্টও করা হয়ে উঠে না শিক্ষার্থীদের। প্রতিটি মানোন্নয়ন পরীক্ষার জন্য ফুল ক্রেডিটের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, যা কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়ার নজির নেই।

এছাড়া বিভাগের সমস্যা নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা কথা বলতে গেলে নানা রকম ভুলভাল বুঝানো হয়। অতীতে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে কিছু শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃত দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

২০০৯-২০১০ সেশনে যারা ভর্তি হয়েছিলেন তাদের সবেমাত্র মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস চলছে। অর্থাৎ ৫ বছরের শিক্ষা জীবন শেষ করতে গিয়ে ইতোমধ্যেই ৮ বছর পার করে ফেলেছেন তারা। যদিও আরও এক সেমিস্টার বাকি রয়েছে। অন্যান্য ব্যাচেরও একই অবস্থা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রথম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এ বিভাগের প্রথম ব্যাচ। এ সময় আমাদের চাকরিতে থাকার কথা কিন্তু এখনো আমরা ছাত্র। চার বছরের কোর্স শেষ করতে আমাদের ৮বছর চলে গেছে তবুও শেষ হয়নি!

অপর এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, একজন শিক্ষার্থী লাখো প্রতিযোগীকে ডিঙিয়ে হাজারও স্বপ্ন নিয়ে জবিতে ভর্তি হয়, কিন্তু ভর্তির পর শিক্ষা জীবন শেষ করার আগেই যদি কর্ম জীবনে প্রবেশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেই শিক্ষা ব্যবস্থার কি দরকার? কিংবা শিক্ষকেরই বা কি দরকার?

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি বিভাগ দেখার দায়িত্ব বিভাগীয় চেয়ারম্যানের। আপনি ওই বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলুন, তিনিই ভালো বলতে পারবেন সেই বিভাগে সেশনজট লাগার কারণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এত বছর পর এ সময়ে এমন বড় সেশনজট সৃষ্টি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে বিভাগের চেয়ারম্যান এ. জেড. এম রুহুল মোমেনের সঙ্গে তিনদিন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সাক্ষাৎ করতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বিভাগে না পেয়ে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন/মেসেজ পাঠানো হলেও তার সাড়া মেলেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
ডিআর/ওএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।