ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

স্কুলের অটোমেশনের কাজে মাত্র এক প্রতিষ্ঠান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৫ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
স্কুলের অটোমেশনের কাজে মাত্র এক প্রতিষ্ঠান

ঢাকা: কথা ছিল কেবল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের ছবিসহ ডাটাবেজ তৈরির জন্য তথ্য পূরণ করার। কিন্তু তথ্য পূরণের নামে স্কুলের পুরো অটোমেশনের কাজ কব্জায় নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছে এক প্রতিষ্ঠান।  

শিক্ষার্থীদের ডাটাবেজ তৈরির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ভর্তির কাজ, ফলাফল প্রক্রিয়াকরণসহ যাবতীয় অটোমেশনের কাজ করছে সেই প্রতিষ্ঠানের নাম ‘করপোরেট সিস্টেম সল্যুশন্স (সিএসএস)’।

এই প্রতিষ্ঠানের কাজের মান নিম্ন হওয়ায় কয়েকটি স্কুল থেকে বাদ পড়েছিলো।



অভিযোগ উঠেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) এক কর্মকর্তার পরিচিত বলে অটোমেশনের কাজ করছে সিএসএস। একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান অটোমেশনের কাজ কব্জায় নিলে কাজের মান যেমন নিম্ন হবে তেমনি নতুনত্বও থাকবে না। পাশাপাশি অন্য সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

শিক্ষার্থীদের ছবিসহ ডাটাবেজ তৈরির লক্ষ্যে নির্ধারিত ওয়েব বেইজড ডাইনামিক সফটওয়্যারে শিক্ষার্থীদের তথ্য পূরণের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর গত ১৮ এপ্রিল আদেশ জারি করে।

এজন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইট sib.gov.bdbd-তে গিয়ে বিদ্যালয়ের ইআইআইএন, শিক্ষকদের ব্যক্তিগত পিডিএস পাসওয়ার্ড আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে তথ্য পূরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি, দক্ষতা ও বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যের জন্য সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

শ্রেণি শিক্ষকের মাধ্যমে তথ্য পূরণের জন্য অনুরোধ করা হলেও সহযোগিতার জন্য সিএসএস’র হেল্পলাইনের নম্বর দেওয়া হয় সেই আদেশে।
 
কিন্তু নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলেই প্রচ্ছদেই ভেসে উঠছে সিএসএস’র অনলাইনভিত্তিক বিদ্যালয় অটোমেশন সফটওয়্যার ‘পাঠশালা’র লোগো। কৌশল প্রয়োগ করে সিএসএস’র বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে স্কুলগুলোকে আকৃষ্ট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অটোমেশন কাজ করে থাকে এমন অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হচ্ছে, বিগত দুই বছর ধরে কোনো টেন্ডার ছাড়াই কাজ করছে সিএসএস।  

তথ্য নেওয়ার উছিলায় ভর্তি প্রক্রিয়া ছাড়াও ফলাফল প্রস্তুত, এসএমএস প্রদানসহ অন্যান্য অটোমেশনের কাজ করছে ওই প্রতিষ্ঠানটি। এর বিনিময়ে স্কুলগুলোর কাছে অর্থ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠান একাই লাভবান হচ্ছে।  

আরও অভিযোগ করা হয়, মাউশির উপ-পরিচালক মোস্তফা কামালের পরিচিত বলে কাজ পেয়েছে সিএসএস।

এ ব্যাপারে মোস্তফা কামাল বলেন, অনেক আগে থেকে সিএসএস অটোমেশনের কাজ করে আসছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য মাউশির পরিচালক এলিয়াছ হোসেনের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলেননি।

প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ হলে অন্যরাও কাজের সুযোগ পেতো। এতে কাজের মানের পাশাপাশি প্রতিযোগিতা তৈরি হতো।
সরকারি চারশ’ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুরো অটোমেশনের কাজ কব্জায় নেওয়ার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।  

সিএসএসিএর আগে রাজধানীর পাঁচটি স্কুলের অটোমেশনের কাজ হাতে নিলেও কাজের মান খারাপ হওয়ায় বাদ দেওয়া হয়। এর একটি সংযুক্ত সরকারি বিজ্ঞান কলেজ ও সংযুক্ত হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষিকা কস্তুরী দত্ত মজুমদার বাংলানিউজ জানান, ওরা (সিএসএস) ঠিকমত আসতো না। কাজ করতো না।

বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৭
এমআইএইচ/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।