ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অবসর কাটে ফেসবুকে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
রাবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অবসর কাটে ফেসবুকে রাবির পরিত্যক্ত খেলার মাঠ-ছবি-বাংলানিউজ

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহিন আলম। রোববার (১৬ জুলাই) বিকেল ৫টায় স্মার্টফোন হাতে বসে আছেন আবাসিক হলের ইন্টারনেট রুমে। কি করছেন জিজ্ঞস করলে জানান, ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি জানান, প্রায় প্রতিদিনই এই সময়ে ইন্টারনেটে ব্রাউজ করে কাটান তিনি। 

খেলার মাঠে যান কিনা জানতে চাইলে শাহীন বলেন, যাওয়া হয় না। অবসর সময় কাটান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে।

খেলাধুলার প্রতি এখন আগ্রহ হয় না বলে জানান তিনি। শুধু শাহিন নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ নেই। যার প্রমাণ মেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠগুলোতে গিয়ে।
 
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৪ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে আবাসিক হলগুলোর মাঠসহ ক্যাম্পাসে খেলার মাঠ ১৩-১৪টি। অথচ বিকেলও মাঠগুলোতে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা খুব বেশি না। যারা মাঠগুলোতে খেলতে আসেন তাদের অনেকে আবার স্থানীয় তরুণ। খেলা না হওয়ায় ঘাস-আগাছা হয়ে পরিত্যক্ত থাকছে ক্যাম্পাসের কয়েকটি মাঠ। বেশিরভাগ আবাসিক হলের মাঠে খেলা হয় শুধু শীত মৌসুমে। অন্য সময় পরিত্যক্ত থাকে।  

অন্যদিকে, নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করেন না এমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক দশক আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠগুলোতে খেলাধুলায় আগ্রহী সব শিক্ষার্থীর একসঙ্গে খেলার সুযোগ হতো না। খেলাধুলা করার জন্য আগে থেকে লাইন দিতে হতো। বিকেলে সব খেলার মাঠ শিক্ষার্থীদের পদচারণরায় মুখরিত থাকতো। সেই তুলনায় এখন খেলাধুলায় আগ্রহী শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুব কম।

রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন আলী বলেন, স্কুল-কলেজে পড়ার সময় বিকেল হলেই মাঠে যেতাম। বিভিন্ন খেলার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। এখন পড়াশোনার বাইরে বাকি সময় কাটে অনলাইনে। শুধু আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট খেলার সময় একটু মাঠে যাই। এখন আর আগের মতো বাইরে মাঠে গিয়ে খেলাধুলার সময় পাচ্ছি না বা ইচ্ছাও করে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যথাযথ যত্নের অভাবে ক্যাম্পাসের অধিকাংশ বাস্কেটবল ও টেনিস কোর্টে বড় বড় ঘাস জন্মেছে। শাহ মখদুম ও আমীর আলী হলের বাস্কেটবল গ্রাউন্ডের দুপাশের গোলপোস্ট ভেঙে পড়ে আছে। টেনিস গ্রাউন্ড চেনার উপায় নেই। খেলা না হওয়ায় আগাছায় পরিত্যক্ত হয়ে আছে মাদারবক্স ও শাহ মখদুম হলের সামনের মাঠ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আন্তঃবিভাগ খেলার তিন মাস মাঠগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভালো পদচারণা দেখা যায়। বাকি সময়টা পড়ে থাকে ফাঁকা। আর বাস্কেটবল, লন টেনিস, স্কোয়াশ, হকির মাঠগুলোও ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামও তার জৌলুস হারাচ্ছে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় উৎসাহী করার জন্য অনেক সযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় আগ্রহী কম। শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ সময় কাটায় ফেসবুকে। তিনি মেধা ও মননের বিকাশে শিক্ষার্থীদের অল্প সময়ের জন্য হলেও খেলাধুলা করার পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৭
আরআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।