ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সহকর্মীকে হয়রানি

জবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে তদন্ত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
জবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে তদন্ত অভিযোগ উত্থাপনকারী নারীর লিখিত অভিযোগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক একেএম আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অশ্লীল ও অশোভন কথাবার্তা বলার অভিযোগ করেছেন একই দপ্তরের এক নারী কর্মকতা। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাসন। 

বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতর সূত্র জানায়, গত ২৯ মার্চ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে কর্মরত সহকারী রেজিস্টার পদ মর্যাদার এক নারী কর্মকর্তা তার প্রতি দাপ্তরিক শিষ্টাচার ও মর্যাদাহানিকর অাচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদন করেন।  

আবেদনের প্রেক্ষিতে আইন অনুষদের ডিন সরকার আলী আক্কাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হেলেনা ফেরদৌস ও বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান লাইসা আহমেদ লিসা।  

তদন্ত কমিটি গত ১১ জুন ওই নারী কর্মকর্তাকে ডাকেন এবং তার কাছ থেকে তার অভিযোগের প্রমাণ চান। ওই নারী কর্মকর্তা তা অভিযোগের পক্ষে একটি রেকর্ড করা সিডি ও দাপ্তরিক হয়রানিমূলক কাগজপত্র দাখিল করেছেন বলে জানা গেছে।  

সূত্র জানায়, ওই নারী কর্মকর্তা ২০১০ সালে জবিতে সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। সেখান থেকে ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে বদলি হয়ে বিল শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালন কালে পারিবারিক সম্পর্ক নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং তার অধীনস্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অশোভন ও অশ্লীল কথাবার্তার অভিযোগ করেন ওই নারী কর্মকর্তা।  

অভিযোগ সূত্র জানা যায়, ওই নারী কর্মকর্তার সাজ সজ্জা ও প্রবাসী স্বামীকে নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অাক্তারুজ্জামান নেতিবাচক কথাবার্তা বলেন। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তার কক্ষে ওই নারী কর্মকর্তাকে একা ডেকে নিয়ে অশ্লীল ও অশোভন কথাবার্তা বলেছেন। ওই নারী কর্মকর্তাকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘অাপনি তো লিপস্টিক লাগান। (নাম ধরে বলেন) তোমার স্বামী তো বিদেশ থাকে। তিন মাস স্বামীর সাথে একত্রে না থাকলে ডিভোর্স হয়ে যায়। কাজেই ( নাম ধরে) তোমার তো স্বামী নেই। "

পাশাপাশি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের প্ররোচনায় তার অধীনস্ত কর্মচারীরাও ওই নারী কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন অাচরণ করেন বলে ওই নারী কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক একেএম আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমি যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলব। আপনারা সেখানে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি অনেকের বিরুদ্ধে বলেন।

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এ অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কাজ করছেন।  

অভিযোগকারী ওই নারী কর্মকর্তা বাংলানিউজকে ঘটনার বিস্তারিত বলেন। তিনি বলেন, আমি আমার সব ঘটনা লিখিত আকারে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছি।  

তিনি বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মহোদয় আমাকে একা তার কক্ষে অশ্লীল ও অশোভন কথা বলেন। আমি তার প্রতিবাদ করায় তিনি প্রতিনিয়ত প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের দিয়ে এবং নিজে আমাকে পারিবারিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয় এমন কথাবার্তা বলেন। তদন্ত কমিটি অামাকে ডেকেছিলেন। অামি অামার প্রমাণগুলো দাখিল করেছি।

তবে এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির কোন সদস্য তদন্তের স্বার্থে কোন কথা বলতে রাজি হন নি। খুব দ্রুত তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শেষ করবে বলে অাশা প্রকাশ করেন তারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘন্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
ডিআর/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।