সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
এর আগে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানীর উত্তরখান, কাচকুঁড়া ও গাজীপুর ভোগড়া বাইপাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ৪ শিক্ষক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি গ্রুপের অ্যাডমিনসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
তারা হলেন- হাসানুর রহমান ওরফে রকি ভাই (২৯), তানভীর হোসেন (২৯), মো. সজীব মিয়া (২৬), মো. এনামুল হক (২৭) ও মো. ইব্রাহিম (২১)। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮টি মোবাইল সেট ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়। এসব ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, অ্যাডমিন রকি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র। সবার কাছে সে রকি ভাই নামে পরিচিত। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও সরবরাহের ক্ষেত্রে বেশ খ্যাতি আছে তার।
জিজ্ঞাসাবাদে রকির বরাতে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলে সেখানে পরীক্ষার দুই মাস আগে থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হতো।
প্রচারণা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকতো, যারা প্রশ্ন পেতে চায় দুই হাজার টাকার বিনিময়ে তার গ্রুপের সদস্য হতে পারবে। পরবর্তীতে প্রশ্ন কমন পড়া সাপেক্ষে বাকি টাকা পরিশোধ করতে হবে।
ফেসবুকে সে একাধিক গ্রুপ খুলে নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ করতো। তবে এক্ষেত্রে ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে তাকে টাকা পাঠালে এবং তার স্ক্রিনশট দিলেই গ্রুপের সদস্য হওয়া যেতো।
তিনি বলেন, রকি এবছর চলমান এসএসসি পরীক্ষার সব বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। প্রতি বিষয়ের জন্য নতুন নতুন গ্রুপ খুলতো। এসব গ্রুপের নাম ছিলো মজা, ব্লাড ডোনেশন ১, ২, ৩ আড্ডা।
কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও সরবরাহের কাজ করতো। আর তার সঙ্গে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও স্কুলের শিক্ষকরা জড়িত বলে আমরা জানতে পারি।
গ্রেফতারকৃতরা সবাই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তানভীর হাসান উত্তরখানের ক্যামব্রিজ হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং সজীব মিয়া অ্যাকাউন্টিং শিক্ষক। এছাড়াও মো. ইব্রাহিম এবং মো. এনামুল হক সৃজনশীল কাচিং সেন্টারে কর্মরত রয়েছেন। এরা হাসানুর রহমান ওরফে রকির কাছ থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা সমাধান করে উত্তরপত্রসহ তাদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করতো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮
এসজেএ/জেডএস