শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, এইচএসসি পরীক্ষায় আমরা আগের চেয়ে আরো অনেক বেশি কঠোর অবস্থান নিয়েছি। অনেক বেশি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, অনেক বেশি পদ্ধতি অ্যাপ্লাই করেছি।
প্রশ্নফাঁস রোধে গত ২৯ মার্চ থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষার্থী ছাড়া জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। গত এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের বিস্তর অভিযোগের পর এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন; যা গতবারের চেয়ে এক লাখ ২৭ হাজার ৭৭১ জন বেশি।
আগামী ১৩ মে পর্যন্ত হবে এইচএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা। সকালের পরীক্ষা ১০টা থেকে এবং বিকেলের পরীক্ষা হবে দুপুর ২টা থেকে। ১৪ থেকে ২৩ মে’র মধ্যে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম দিন এইচএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র, সহজ বাংলা প্রথমপত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথমপত্র এবং ডিআইসিএসে বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা হবে। মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে কোরআন মাজিদ বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে।
কারিগরি বোর্ডে এইচএসসিতে (ভোকেশনাল) সকালে বাংলা-২ (সৃজনশীল নতুন/পুরাতন সিলেবাস) ও বিকেলে বাংলা-১ (সৃজনশীল নতুন/পুরাতন সিলেবাস) পরীক্ষা রয়েছে। কারিগরির ব্যবসায় ব্যবস্থাপনাতে সকালে বাংলা-২ (নতুন সিলেবাস) ও বাংলা-২ (পুরাতন সিলেবাস) এবং বিকেলে বাংলা-১ (সৃজনশীল নতুন সিলেবাস) ও বাংলা-১ (সৃজনশীল পুরাতন সিলেবাস) বিষয়ের পরীক্ষা হবে। এছাড়া ডিপ্লোমা-ইন কমার্সে সকালে হবে বাংলা-২ এবং বিকেলে বাংলা-১ (সৃজনশীল) এর পরীক্ষা।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সকাল ৯টায় সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ কেন্দ্রে নির্দেশিত কার্যক্রম মনিটরিং করতে যাবেন। প্রতিমন্ত্রী কেরামত আলী সকাল ৯টায় বকশীবাজারে সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন।
পরীক্ষা উপলক্ষে গত ২৮ মার্চ সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বরে সেট কোড ব্যবহারের নির্দেশনার এমএমএস যাওয়ার পর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।
কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
গত বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। সে হিসেবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ৭৭১ জন।
এবার ২ হাজার ৫৪১টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৯৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন। গতবারের তুলনায় এবার ৭৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৪৪টি কেন্দ্র বেড়েছে।
এইচএসসিতে ৮টি সাধারণ বোর্ডের অধীনে ১০ লাখ ৯২ হাজার ৬০৭ জন, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে এক লাখ ১২৭ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম-এ এক লাখ ১৭ হাজার ৭৫৪ জন এবং ডিআইবিএসে ৯৬৯ জন পরীক্ষা দেবেন।
এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ লাখ ৯২ হাজার ৭৩০ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ১৮ হাজার ৭২৭ জন ছাত্রী।
ঢাকার বাইরে এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২৯৯ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে, এরমধ্যে ১৫৯ জন ছাত্র এবং ১৪০ জন ছাত্রী।
এবার ২৮টি বিষয়ের ৫৪টি পত্রের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। গত বছরও ৫৪টি পত্রে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হয়।
এবারো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবেন। এ ধরনের পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবেন।
আর অটিস্টিকসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা পাবেন অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময়। এ ধরনের শিক্ষার্থীরা অভিভাবক, শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৮
এমআইএইচ/জেডএস