সোমবার (০২ এপ্রিল) ভর্তি কার্যক্রম শুরুর পরপরই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে ভর্তি হওয়া থেকে বিরত থাকেন। শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ১ এপ্রিল থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি শুরু হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিকায় ভর্তির জন্য ৮৩৫ টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন ফিস ৮০০ টাকা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিক ফিস ২০ টাকা, বিএনসিসি ফিস ৫ টাকা এবং রোভার স্কাউট ফি বাবদ ১০ টাকা নিতে বলা হয়েছে।
তবে এ নির্দেশনা মানছে না যশোর সরকারি এমএম কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজটিতে একজন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য ৪ হাজার ৫৩০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। যার মধ্যে কোনো খাত উল্লেখ না করা ৩ হাজার ৩৩০ টাকা জমা দিতে হচ্ছে কলেজের ব্যাংক হিসাবে। আর সেমিনার, ইনকোর্স, টার্ম পেপার ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতি নামে বিভাগীয় চার্জ হিসেবে ১ হাজার ২০০ টাকা সংশ্লিষ্ট বিভাগে নগদ জমা নেওয়া হচ্ছে।
যশোর এমএম কলেজ সূত্রে জানা যায়, কলেজটিতে ১৭টি বিষয়ে মাস্টার্সের আসন রয়েছে ৫ হাজার ৩৭০টি। সোমবার (০২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, ইংরেজি ও ইতিহাস বিভাগে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।
তবে সোমবার থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করে শিক্ষার্থীরা ভর্তি কার্যক্রম বয়কট করেন।
অভিজিৎ চক্রবর্তী নামে এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত টাকার চেয়ে অনেক বেশি টাকা আমাদের কলেজে নেওয়া হচ্ছে। এজন্য আমি ভর্তি হইনি। অবশ্যই আমাদের অবৈধভাবে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ না নিয়েই ভর্তি করতে হবে।
নাজমুল হুদা নামে অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরা সম্মানের। তাই বলে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন না। ভর্তির নামে এই বাণিজ্য চলতে দেওয়া হবে না।
প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার কথা জানিয়ে শিমুল বিশ্বাস রিংকু ও ইয়াসিন শেখ নামে দুই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে ভর্তি হবো না। প্রয়োজনে কঠোর আন্দোলনে যাবো।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিভাগীয় প্রধান বলেন, ভর্তির জন্য কোন কোন খাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে তা আমরা শিক্ষকরাই জানি না। আর এই টাকা কোথায় যায়, কী হয়? তার কোনো হিসাবই আমরা জানি না। শুধু অধ্যক্ষ ও তার সংশ্লিষ্ট লোকজন বলতে পারবেন।
যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী বাংলনিউজকে বলেন, কলেজে অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা অতি দরিদ্র। খুব কষ্ট করে তারা লেখাপড়া করেন। অতিরিক্ত টাকা আদায় করার কারণে তারা যে আন্দোলন শুরু করেছেন তাতে আমাদের সমর্থন আছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কলেজ প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। এর মধ্যে যদি সমাধান না হয় তাহলে আমরাও আন্দোলনে নামবো।
যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু তালেব মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, নতুন করে অতিরিক্ত কোনো ফিস নির্ধারণ করা হয়নি। গত বছর যে হারে টাকা নেওয়া হয়েছিলো এবারো সেই হারে টাকা নেওয়া হচ্ছে।
যশোর এমএম কলেজে ভর্তিতে অতিরিক্ত দেড় কোটি টাকা আদায়
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৮
এমজেএফ