প্রশ্নফাঁস এড়াতেই গুণীদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর বৃত্তির ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক সমাপনীতে এমসিকিউ রাখছি না।
মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সময় যে ঘটনাগুলো ঘটেছিল বা সেগুলো নিয়ে জ্ঞানী-গুণী-বিদগ্ধদের মধ্যে যে আলোচনাহয়েছে, আমরা বিভিন্ন আলোচনার মধ্যদিয়ে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ যেমন, রাষ্ট্রপতি, সর্বোচ্চ পদাধিকার; তিনিও সাজেশন দিয়েছেন।
‘আমরা চাই নকলমুক্ত পরিবেশে আমাদের ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দিক। ছাত্ররা প্রশ্ন ফাঁসের এই জ্বালা নিয়ে না জ্বলুক আমরা চাই। শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের যে প্রাণান্তকর চেষ্টা, তার মধ্যে এ জাতীয় কর্মকাণ্ডগুলো বিষফোঁড়ার মতো। এটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এ ভাবনাটি নিয়ে আমরা ভাবছি। ’
মন্ত্রী বলেন, কখনও কখনও আগের যে ব্যবস্থা মন্দ ছিল তাও তো নয়। আগে যে কোনো একটি প্রশ্ন করে বলা হতো তিন লাইন বা পাঁচ লাইন লেখো। তাতে ওই ছেলে বা মেয়েটির লেখা ও পড়া এবং বোঝার ক্ষমতা পাওয়া যেতো। সেই পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য এরকম মনোযোগ নিয়ে কাজ করছি।
এটা বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন জানিয়ে বলেন, আমরা আগাম ঘোষণা দিয়েছি। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। প্রস্তুতি হলো টিকচিহ্ন দিয়ে পরীক্ষা না দেওয়ার জন্য। নেপ এটা নিয়ে কাজ করছে, সমস্ত স্কুলে নির্দেশনা দেওয়া হবে। আমরা সেই দিকে যাচ্ছি। প্রশ্নফাঁসের যে সুযোগ বন্ধ করার জন্য, এইচএসসিতে প্রয়োগ হয়ে গেছে। পরীক্ষা ভালোভাবেই হলো, এই রকম (ফাঁস) কোনো গল্পই নেই। ’
তিনি বলেন, শুধু আইনিকরণ নয়, কোনো কায়দা করে বন্ধ করা যায় কিনা। আমরা এমন কোনো পদ্ধতি নিতে পারি কিনা, যেটার মধ্যদিয়ে এর প্রভাব থাকবে না।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারির পর সোমবার (২ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)।
মন্ত্রী জানান, পরিপত্র জারি করা হয়েছে। স্কুলগুলোতে মেসেজ চলে গেছে। স্কুলে বাচ্চাদের বলেছি পুরোপুরি সিলেবাসের উপর থাকেন, সিলেবাসের মধ্য থেকে টিক দেওয়ার জন্য না কোনটা আসবে সেটা নিয়ে কাজ করছি। যাদের জানার দরকার বিশেষ করে শিক্ষকরা সবাই জেনে গেছেন। ফিরে গেলে পুরোটাই ফিরে যাবো।
যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নকেই সৃজনশীল প্রশ্ন বলা হচ্ছে, যা গত কয়েক বছর ধরে ধাপে ধাপে নম্বর বাড়িয়েছে নেপ।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ২০০৯ সালে শুরু হওয়া প্রাথমিক সমাপনীতে ২০১২ সালে ১০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্ন সংযোজন করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৩৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৫০ শতাংশ সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৭ সালে ৮০ শতাংশ এবং ২০১৬ সালে প্রতি বিষয়ে ৬৫ শতাংশ প্রশ্ন যোগ্যতাভিত্তিক ছিল।
প্রাথমিক বৃত্তির ফল প্রকাশ
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ